ঢাকা: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক মহাসচিব বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আইরিন খান সংস্থাটির ৫ লাখ পাউন্ড আত্মসাৎ করেছিলেন। ২০০৯ সালে যখন তার চাকরির মেয়াদ শেষ হয় তখন অবৈধভাবে সংস্থার ৫ লাখ ৩৩ হাজার ১০৩ পাউন্ড পকেটস্থ করেন তিনি।
তার এই কেলেঙ্কারির খবর ছাপা হয় ব্রিটেনের দি এক্সপ্রেস ইউকে, ডেইলি মেইল, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমসহ বিশ্বের প্রথম সারির আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
এ ঘটনায় তখন ব্রিটেনের রাজনৈতিক মহল সহ আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আইরিন খান ছাড়াও সংস্থাটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার নামেও একই ধরনের কেলেঙ্কারির খবর ছাপা হয় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
এক্সপ্রেস.ইউকে জানায়, অ্যামনেস্টি থেকে ওই অর্থ আত্মসাতের মাত্র সাত মাস আগেই অ্যামনেস্টির দরিদ্র তহবিলে অনুদান দেয়ার প্রচারণা শুরু করেছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে সংস্থার বিপুল পরিমাণ অর্থ গ্রহণের বিষয়টি তখন ব্রিটেনে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তোলে।
ব্রিটেনের রক্ষণশীল দলের তৎকালীন পার্লামেন্ট সদস্য ফিলিপ ডেভিস ওই সময় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে ব্যঙ্গ করে ‘মোটা বেড়াল’ বলেও অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, মানুষ অ্যামনেস্টিকে যখন অর্থ সহায়তা দেয় তখন তারা ভাবে এই অর্থ দরিদ্রদের কাজে লাগবে। তারা এ রকম একটি মোটা বেড়ালকে অনুদান দেয়ার কথা স্বপ্নেও ভাবেন না।
আইরিন খান সহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের এসব অপকর্মের ফলে ব্যাপক ইমেজ সঙ্কটে পড়ে অ্যামনেস্টি। ব্যাপক সমালোচনার শিকার হন আইরিন খান নিজেও। সংস্থাটির তহবিলে নিয়মিত অর্থ প্রদানকারী একজন এক্সপ্রেস.ইউকে জানান, বিশ্বে মানবাধিকারের ব্যাপারে বড় বড় লেকচার দিয়ে এই নারী কিভাবে নিজেই বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করতে পারেন।
বিশ্বের প্রথম নারী, প্রথম এশীয় বংশোদ্ভূত এবং প্রথম মুসলিম হিসেবে আইরিন খান অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনের মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০০১ সালে। এরপর ২০০৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি সংস্থায় দায়িত্ব পালন করেন।
তার অর্থ নয় ছয়ের এই বিষয়টি প্রথম ধরা পড়ে ২০১০ সালের ৩১ মার্চ প্রকাশিত অ্যামনেস্টির বার্ষিক অর্থনৈতিক বিবৃতিতে। শুধু আইরিন খানই নয়, ওই সময় তার অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী অ্যামনেস্টির সহকারী মহাসচিব কেট গিলমোরও সংস্থার ৩ লাখ পাউন্ড আত্মসাৎ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৫
আরআই
** ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মানবতাবিরোধী সংগঠন’