ঢাকা: প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীরা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মূল সনদপত্র ও ট্রান্সক্রিপ্ট আটকে রাখতেন বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের (উত্তর) ডিসি শেখ নাজমুল আলম।
শনিবার (৩১ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিষয়টি জানান।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রাত থেকে শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর তেজগাঁও ও ধোলাইখাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ১৭ সদস্যকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
আটকরা হলেন- মো. জোবায়ের হোসেন, মো. সাজু আহমেদ, মো. মাহমুদুল হাসান, সামিউল ইসলাম, সাব্বির হোসেন, মো. হাসানুর রশিদ, মো. মেহেদি হাসান, মো. হৃদয় ইসলাম, মো. রায়হান রাব্বি, মো. আকাশ আহমেদ, তানভীর, সবুজ খান, মো. সোহাগ, মেহেদি হাসান, আকিব বিন বারি, নাহিদুল হক ও মানিক মিয়া।
ডিসি শেখ নাজমুল আলম জানান, অভিযানের সময় আটকদের কাছ থেকে বেশ কয়েকজন ভর্তিচ্ছুর এসএসসি ও এইচএসসির মূল সনদপত্র, ট্রান্সক্রিপ্ট এবং মোবাইল ফোন ও হোয়াটস অ্যাপে পাঠানো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র, ফেসবুকে যোগাযোগ ও অ্যাড দেওয়ার কথাবার্তা সম্বলিত ডাউনলোড কপি উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীরা মোবাইল ফোন ও হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস করতেন। ফেসবুকের মাধ্যমে ভর্তিচ্ছুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন তারা।
আটকদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান ডিসি শেখ নাজমুল আলম।
তিনি বলেন, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করেছিলো। কমিটি জানতে পারে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলে প্রশ্নপত্র বিক্রির একটি চক্র রয়েছে।
পরে গোয়েন্দা পুলিশকে অবগত করলে ওই হল থেকে মো. জোবায়ের হোসেন নামে একজন পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জোবায়ের গোয়েন্দা পুলিশকে জানান, প্রতি একজন পরীক্ষার্থী যদি আরও পাঁচজন পরীক্ষার্থীকে জোগাড় করতে পারেন, তবে তিনি বিনামূল্যে প্রশ্নপত্র পাবেন।
জোবায়েরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সবাইকে আটক করা হয় বলে জানান তিনি।
প্রতি পরীক্ষার্থীদের তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে দেওয়ার চুক্তি হয়। তবে প্রশ্নপত্র মিলে গেলেই এ টাকা পরিশোধ করে তাদের এসএসসি ও এইচএসসির মূল সনদপত্র-ট্রান্সক্রিপ্ট ফেরত দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, হোয়াটস আপের মাধ্যমে এই প্রশ্ন সরবরাহ করেন আকিব বিন বারি ও নাহিদুল হক।
এ বিষয়ে পাবলিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ অপরাধ আইন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে তেঁজগাও মডের থানায় মামলার প্রক্রিয়াধীন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৫
এসজেএ/এসএস