খুলনা: খুলনায় চাঞ্চল্যকর শিশু রাকিব হত্যা মামলার রায়ের দিন আগামী ০৮ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত।
রোববার (০১ নভেম্বর) দুপুরে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক (অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ) দিলরুবা সুলতানা এ দিন ধার্য করেন।
গত ২৮ অক্টোবর ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫২ ধারা অনুযায়ী আসামিদের বক্তব্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। আত্মপক্ষ সমর্থনকালে ওই দিন মামলার ৩৮ জন সাক্ষীর আদালতে দেওয়া সাক্ষ্য পৃথকভাবে তিন আসামি ওমর শরীফ, তার মা বিউটি বেগম ও চাচা মিন্টু খানকে সংক্ষিপ্তাকারে পড়ে শোনানো হয়। এরপর আদালত তিন আসামিকেই এ বিষয়ে তাদের কিছু বলার আছে কি-না জানতে চান।
তিনজনই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে তাদের কোনো সাফাই সাক্ষী নেই বলে জানান।
গত ২৫ অক্টোবর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
গত ৩ আগস্ট বিকেলে খুলনার টুটপাড়ায় শরীফ মোটর্সে মোটরসাইকেলে হাওয়া দেওয়ার কম্প্রেসার মেশিন দিয়ে শিশু রাকিবের মলদ্বারে বাতাস ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত বায়ুর চাপে রাকিব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাকিবকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
শিশু রাকিবকে নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শরীফ ও মিন্টু মিয়াকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে ক্ষুব্ধ জনতা। পরে শরীফের মা বিউটি বেগমকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় পরদিন নিহত শিশুর বাবা মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে তিনজনের নামে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং ০৪)।
২৫ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) কাজী মোস্তাক আহমেদ এজাহারভুক্ত তিন আসামি মোটরসাইকেল গ্যারেজ মালিক ওমর শরীফ, তার কথিত চাচা মিন্টু খান ও শরীফের মা বিউটি বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ৬ সেপ্টেম্বর মহানগর আদালত বিচার কাজ শুরুর জন্য মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠান।
পৈশাচিকভাবে শিশু রাকিবকে হত্যার পর খুলনাসহ সারা দেশে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সামাজিক মাধ্যমে যা ছড়িয়ে পড়ে দেশের বাইরে। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এমনকি শিশুরাও প্রতিবাদ জানাতে মানববন্ধন, প্রতিবাদ মিছিল, সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৫
এমআরএম/এএসআর