ঢাকা: বাংলাদেশের মানুষ এখন নেতিবাচক সংবাদের তুলনায় ইতিবাচক সংবাদের প্রতি বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আর এ কারণে সংবাদমাধ্যমেও ইতিবাচক খবর প্রকাশ ও প্রচারের বেশি বেশি সুযোগ তৈরি হয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তায়নারী কৃষকদের অবদানের স্বীকৃতি ও অধিকার সংরক্ষণে জাতীয় প্রচারাভিযানের আওতায় ঢাকায় সাংবাদিকদের উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষেই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন মাধ্যমের ২২ জন সাংবাদিক এতে অংশ নেন।
রাজধানীর সেভেন হিল রেস্টুরেন্টে গণমাধ্যম বিষয়ক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমষ্টি ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অক্সফাম’র যৌথ উদ্যোগে "খাদ্য নিরাপত্তায় নারীর ভূমিকা" শীর্ষক এই কর্মশালায় মাঠ পর্যায়ে খাদ্য উৎপাদনে নারীদের অবদানের কথা উঠে আসে। পাশাপাশি গুরুত্ব পায় এসব অবদানের কথা কীভাবে আরও গণমানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব তা নিয়ে।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এর হেড অব নিউজ মাহমুদ মেনন আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, রাজনৈতিক সংবাদে মানুষের আগ্রহ বেশি এমন একটি কথা প্রচলিত রয়েছে, আর কিছুটা সত্যও বটে। কিন্তু এখন সময় পাল্টাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময় বিশ্লেষণ করলে দেথা যাবে মানুষ ইতিবাচক সংবাদের প্রতি বেশি আগ্রহী। তারা কৃষি উন্নয়নের কথা জানতে চান ও দেশের উন্নয়নের খবর জানতে চান।
কোনো গ্রামের কৃষকের কথা লিখলে তা ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায় এমন উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এখানে লেখা ও উপস্থাপন কৌশল একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
উন্নয়নের বিভিন্ন দিক মানুষ জানতে চায় উল্লেখ করে তিনি পদ্মা সেতুর ওপর বাংলানিউজের পাঠকের যে সাড়া ও মিথস্ক্রিয়া ঘটে তার কথা জানান। উন্নয়ন সাংবাদিকতার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার ও বেশি বেশি উন্নয়ন প্রতিবেদন তৈরির সময় এসেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মাহমুদ মেননের সাথে সহমত প্রকাশ করেন ডেইলি স্টারের এ্যাসাইনমেন্ট এডিটর রিয়াজ আহমেদ। তিনি স্পষ্টতই মত দেন, রাজনৈতিক সংবাদের তুলনায় কৃষি সংবাদকে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত।
এক সময়ে কৃষি বিষয়ক সংবাদ তৈরিতে খ্যাতি কুড়োনো এই সাংবাদিক বলেন, দেশের রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য গুরুত্ব রাখে তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে উন্নয়ন বিষয়ক খবর। কৃষি খাতে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের সংবাদগুলোর দিকে নজর দেয়া উচিত। কারণ নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে সমস্যা সমাধান না হলে জটিলতা দেখা দেবে, মত দেন রিয়াজ আহমেদ।
কৃষি, নারী ও গণমাধ্যমকর্মীদের করণীয় নিয়ে আলোচনায় আরও অংশ নেন দ্য ইন্ডিপেডেন্টের সিনিয়র সাব-এডিটর মানস আলী।
কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন চ্যানেল আই এর বার্তা সম্পাদক মীর মাসরুর জামান।
কর্মশালায়খাদ্য নিরাপত্তায় নারীর অবদান, নারী কৃষকদের স্বীকৃতি ও অধিকার সুরক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা, জাতীয় অর্থনীতিতে নারী কৃষকদের অবদানের বিষয়গুলো গণমাধ্যমে আরো দৃশ্যমান করার জন্য প্রয়োজনী পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোকপাত করেন মাসরুর জামান।
শেরপুরের আদিবাসী নারী কৃষক মায়াবতী কোচ তার সংগ্রাম, সাফল্য ও সমস্যা সম্পর্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।
নারী কৃষকদের অধিকার সংরক্ষণে জাতীয় প্রচারাভিযানের প্রেক্ষাপট ও এর আওতায়পরিচালিত কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন অক্সফ্যামের কমিউনেকশন ম্যানেজার মনীষা বিশ্বাস।
কর্মশালা পরিচালনা করেন সমষ্টিরপরিচালক মীর সাহিদুল আলম ও রেজাউল হক।
২০১১ সাল থেকে খাদ্য অধিকার, জলবায়ু অভিযোজন, অর্থনৈতিক ন্যায্যতার দাবিতে অক্সফ্যামের বৈশ্বিক প্রচারাভিযান ’গ্রো’ পরিচালিত হচ্ছে। তারই আওতায় নারী কৃষকদের নিয়ে এই প্রচারাভিযানটি চলছে।
প্রচারাভিযানে অন্যান্য কর্মসূচির পাশাপাশি দেশের সাত বিভাগে সাংবাদিকদের জন্য উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৫
আরআই