নোয়াখালী: নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে ব্যাংক (ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংক) থেকে উত্তোলন করা ১৮ লাখ টাকাসহ ৪ প্রতারককে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (০৩ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহরের ল-ইয়ার্স কলোনি থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- মাইজদীর ল-ইয়ার্স কলোনির বাসিন্দা ফয়সাল আহম্মেদের স্ত্রী তাহমিনা সুলতানা (২৪), তাহমিনার ছোট ভাই ও গিয়াস উদ্দিনের ছেলে শিহাব উদ্দিন রাহাত (১৯), রাহাতের বন্ধু ও একই এলাকার মহিবুর হকের ছেলে ফাহিমুল হক জিসান (১৮) এবং ফয়েজ উদ্দিন মাহমুদের ছেলে রাব্বি (১৮)।
ব্যাংক একাউন্ট হোল্ডার শারমীন আহম্মেদ বাংলানিউজকে জানান, জেলা শহর মাইজদীর প্রধান সড়ক সংলগ্ন জহুরুল হক মিয়ার গ্যারেজ এলাকার জহুরার বাসিন্দা তারা। তার আপন ছোট ভাইয়ের স্ত্রী তাহমিনা সুলতানা তাদের বাসায় যাতায়াত করতেন।
এর মাধ্যমে তাদের পারিবারিক অনেক বিষয় তাহমিনার জানা ছিল। এরই সুযোগে কোনো এক সময় তিনি আমার ব্যাংক একাউন্টের চেক বইয়ের দুইটি পাতা ছিঁড়ে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আমার মোবাইল ফোনের বাংলালিংক নম্বরটি তার টেলিটক নম্বরের সঙ্গে ডাইভার্ট করে গোপনে।
পরে তিনি তার ছোট ভাই রাহাত, রাহাতের বন্ধু জিসান ও রাব্বির মাধ্যমে মাইজদীর ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংকের আমার একাউন্ট থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন করেন।
ওই দিন রাতে আমার স্বামী মো. আকবর হোসেন বাসায় এসে আমাকে বলে তোমার মোবাইল নম্বর ডাইভার্ট করা কেন। পরে ডাইভার্ট পরিবর্তন করার পরপরই ব্যাংক থেকে একটি ম্যাসেজ আসে তার একাউন্ট থেকে ১৮ লাখ টাকা ক্যাশ আউট করা হয়েছে।
দ্রুত বিষয়টি ব্যাংক ম্যানেজারকে জানালে তিনি বলেন, আপনার ছোট ভাই দুপুরে ১৮ লাখ টাকার একটি চেক নিয়ে আসে উত্তোলন করার জন্য। পরে আমরা আপনাকে ফোন দিলে আপনিইতো বলেছেন অসুস্থ অবস্থায় ঢাকায় আছেন। চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে আপনার টাকা প্রয়োজন। যেন ১৮ লাখ টাকা আপনার ভাইয়ের কাছে দিয়ে দেওয়া হয়।
শারমীন আহম্মেদ আরও বলেন, প্রতারণার বিষয়টি ম্যানেজারকে বুঝিয়ে বললে তিনি আমাদেরকে মঙ্গলবার সকালে ব্যাংকে যেতে বলেন। ব্যাংকে গিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী তাহমিনার ছোট ভাই রাহাত সহ তিনজনে মিলে টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে। এরপরই পুরো প্রতারণার বিষয়টি আমাদের কাছে পরিস্কার হয়ে যায়।
সন্ধ্যায় পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাই। পুলিশ ল-ইয়ার্স কলোনি এলাকায় অভিযান রাতে উত্তোলনকৃত ১৮ লাখ টাকার মধ্যে থেকে ১৭ লাখ ৪৫ হাজারসহ চার প্রতারককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে টাকা সহ চার প্রতারককে আটক করা হয়েছে।
এবিষয়ে ব্যাংক একাউন্ট হোল্ডার শারমীন আহম্মেদের স্বামী একটি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০২১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৫
পিসি