ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে নেদারল্যান্ডস

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৫
ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে নেদারল্যান্ডস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মেলানি সুল্জ ফন হেগেন

নেদারল্যান্ডসের হেগ থেকে: পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদী শাসন ও ভূমি উদ্ধারে বাংলাদেশের ডেল্টা প্ল্যান- ২১০০ (ব-দ্বীপ পরিকল্পনা- ২১০০) বাস্তবায়নে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে নেদারল্যান্ডস।

বুধবার (০৪ নভেম্বর) নেদারল্যান্ডসের গ্রান্ড হোটেল আমরাথ কুরহাউস দি হেগে ‘দি ডেলটা প্ল্যান অ্যাপরোচ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে সহায়তার এ আশ্বাস দেন দেশটির অবকাঠামো ও পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী মেলানি সুল্জ ফন হেগেন।



স্থানীয় সময় সকালে এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

মেলানি সুল্জ ফন হেগেন নিজ দেশের পানি নিয়ন্ত্রণ এবং ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকার কথা তুলে ধরে বলেন, একটা কথা আছে, সৃষ্টিকর্তা পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। আর, ডাচরা নেদারল্যান্ডস সৃষ্টি করেছে।

তিনি উদাহরণ হিসেবে সমুদ্রসীমার নিচে অবস্থিত নেদারল্যান্ডসের শিফল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কথা তুলে ধরেন।

শিফল বিমানবন্দর এলাকাটি একসময় হারলেম লেকের অংশ ছিলো। বিমানবন্দরটি সমুদ্রসীমার চার মিটার নিচে অবস্থিত বলেও প্রধানমন্ত্রীকে জানান মেলানি।

রটারডাম বন্দরের কথা উল্লেখ করে দেশটির অবকাঠামো ও পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ব-দ্বীপের ব্যবহার আরো বৃদ্ধি করতে হবে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ করে অর্থনীতির বিস্তারই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

নদীর নাব্যতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে নেদারল্যান্ডসের এই মন্ত্রী বলেন, পানিরও স্থান প্রয়োজন। পানিকে তার জায়গা ছেড়ে দিতে হবে।

অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বন্যাপ্রবণ বাংলাদেশ ও সমুদ্র সীমা বৃদ্ধির ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশের সঙ্গে নিজ দেশের তুলনা করেন মেলানি সুল্জ। তিনি ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এক সঙ্গে কাজ করার আশা প্রকাশ করেন।

পানি ব্যবস্থাপনায় নেদারল্যান্ডসের ৮শ’ বছরের ইতিহাস রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
 
১৯৫৩ সালের ভয়াবহ বন্যার কথা স্মরণ করে নেদারল্যান্ডসের ৬০ বছরের ডেল্টা প্ল্যান গ্রহণের কথাও উল্লেখ করেন দেশটির পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী।

ভবিষ্যতে ডেল্টা প্ল্যান গ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পানি ব্যবস্থাপনায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা পুরনো পদ্ধতিকে অনুসরণ করছি।

অনুষ্ঠানে ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় বাংলাদেশের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন জেনারেল ইকোনমিক কমিশনের জয়েন্ট চিফ মফিদুল ইসলাম।

এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের বৈদেশিক বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী লিলিয়ান প্লাউম্যান এবং মেলানি সুল্জ ফন হেগেন সাক্ষা‍ৎ করেন।

অনুষ্ঠানের পর প্রধানমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসের ব-দ্বীপ অঞ্চল এবং পোতাশ্রয় পরিদর্শনে ফিউচারল্যাল্ডের উদ্দেশে হোটেল ছেড়ে যান। সেখানে মধ্যাহ্নভোজ শেষে তিনি আবার হোটেলে ফিরে আসবেন।

স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসের রানী ম্যাক্সিমা সেরুটির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রয়্যাল প্যালেসে যাবেন।

রানীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে শেখ হাসিনা নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সরকারি বাসভবনে যাবেন। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন মার্ক রুট। এরপর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে তাদের উপস্থিতিতে দুই দেশের প্রতিনিধিদের সমঝোতা স্বারকে স্বাক্ষর করার কথা রয়েছে। এরপর নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সফর শেষে আগামী ৬ নভেম্বর দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

মঙ্গলবার (০৩ নভেম্বর) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে ৩ দিনের সফরে নেদারল্যান্ডসে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ সময়:  ১৮১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৫
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।