শিবগঞ্জ (বগুড়া) রহবল থেকে ফিরে: মুখে হাসি লেগেই থাকতো তার। আচার ব্যবহার ছিল অনুকরণীয়।
কারো সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ ছিল না। যতটুকু সময় পেতেন সবাইকে নিয়ে আনন্দ করেই কাটিয়ে দিতেন। পেশাগত জীবনেও ছিলেন অত্যন্ত সৎ। দায়িত্বপালনে কোনো গড়িমসি ছিল না তার। এক কথায় অভাবের সংসারে তিনিই ছিলেন একমাত্র আলোর প্রদীপ। তিনি আর কেউ নন। সবার প্রিয় শিল্পপুলিশ সদস্য মুকুল হোসেন (২৫) তার নাম। আজ সে আলোর প্রদীপ নিভে গেছে।
বুধবার (০৪ নভেম্বর) দুপুরে নিহতের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী দেউলি ইউনিয়নের রহবল পূর্বপাড়ায় গেলে স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা হলে এসব তথ্য উঠে আসে।
মহাস্থান ডিগ্রি কলেজে লেখাপড়া করেন আতিকুল রহমান। তিনি বাংলানিউজকে জানান, রহবল তার গ্রাম। এই গ্রামেরই বড় ভাই মুকুল। তারা পাশাপাশি বসবাস করেন।
তিনি বলেন, মুকুল ভাইয়ের সংসারে প্রচণ্ড অভাব ছিল। এখনও আছে। তবে আগের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম। কিন্তু তাকে দেখে কখনও অভাব বোঝা যায়নি। তিনি ছিলেন অত্যন্ত মিশুক মানুষ।
মুকুল হোসেনের অত্যন্ত কাছের মানুষ চাচাতো ভগ্নিপতি ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, মুকুল ছিল অত্যন্ত নম্র ও ভদ্র ব্যক্তি। সর্বশেষ ছুটিতে আসার পর তার সঙ্গে অনেক হাসাহাসি-মজাও হয়। শেষে সংসারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেন।
তিনি আরও জানান, মুকুল জানিয়েছিলেন- এবার চাকরিতে যোগদানের পর বেতনের টাকা দিয়ে আস্তে আস্তে বন্দকের জমিগুলো ফেরানোর চেষ্টা করবেন। আরও কথা হয় ভাই-বোনদের লেখাপড়া ভালো করার বিষয় নিয়ে। সংসারের বিভিন্ন ভাবনা তুলে ধরেন। কথাগুলো বলতে বলতে আরিফুল ইসলাম কান্নায় ভেঙে পড়েন।
প্রতিবেশী সিরাজুল ইসলাম, জামিরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, শিখা, শিল্পী, কল্পনাসহ একাধিক ব্যক্তি বাংলানিউজকে জানান, শুনি পুলিশের লোক নাকি ভালো না। কিন্তু মুকুলকে দেখলে কেউ আর এ কথা বলবে না। মুকুলের তুলনা হয় না। তার আচার ব্যবহারে পাড়াপ্রতিবেশী সবাই অত্যন্ত সন্তুষ্ট। এমনকি যারা তাকে চেনেন এমন কেউই মুকুলের ব্যাপারে কোনো খারাপ মন্তব্য করতে পারবেন না।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৫
এমবিএইচ/আইএ
** মুকুলের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম
** মুকুলের খুনিদের ফাঁসি চান পরিবার-গ্রামবাসী
** ভরসা আপাতত মোবাইল ফোনের কললিস্ট