ঢাকা: চার হাজার ১১৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের (অর্থ পাচার) অভিযোগে দায়ের করা পৃথক দু’টি মামলায় ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিনসহ ৫১ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ শুনানির জন্য ১১ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) আংশিক চার্জ শুনানি শেষে ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা এ দিন ধার্য করেন।
ডেসটিনির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজি ও দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন কাজল।
দুদকের উপ-পরিচালক মোজাহার আলী সরদার এবং সহকারী পরিচালক মো. তৌফিক দীর্ঘ তদন্তের পর ২০১৪ সালের ৪ মে দু’টি মামলার পৃথক দু’টি চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। চার্জশিটে রফিকুল আমীনসহ ৫১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলা দু’টির ৩২ নম্বর মামলায় অভিযোগ আনা হয় ১৯ জনের বিরুদ্ধে আর ৩৩ নম্বর মামলায় অভিযোগ আনা হয় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে। দু’টি মামলায় একই ব্যক্তি একাধিকবার আসামি হওয়ায় মোট আসামির সংখ্যা ৫১।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, অতি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে এমএলএম (বহুস্তরের বিপণন) ব্যবসা পদ্ধতিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো- অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড এবং ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেড গ্রুপের পরিচালকরা বিভিন্ন প্যাকেজের শেয়ার দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। ওই সব অর্থ ৩২টি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের নামে নিজেদের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসেবে স্থানান্তর করেছেন ডেসটিনির পরিচালকরা।
আসামিরা হলেন- সাবেক সেনাপ্রধান ও ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট লে. জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ, ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, তার স্ত্রী ফারাহ দীবা, ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোফরানুল হক, পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন, সাঈদ-উর-রহমান, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, জমশেদ আরা চৌধুরী, ইরফান আহমেদ, শেখ তৈয়বুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসেন, আজাদ রহমান, আকবর হোসেন, শিরিন আক্তার, রফিকুল ইসলাম সরকার, মজিবুর রহমান, সুমন আলী খান, সাইদুল ইসলাম খান, আবুল কালাম আজাদ এবং ডায়মন্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের পরিচালক লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম।
তদন্তে এই মামলায় নতুন করে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মকর্তা মেজর (অব.) সাকিবুজ্জামান খান, এস এম আহসানুল কবির, এ এইচ এম আতাউর রহমান, গোলাম কিবরিয়া, মো. আতিকুর রহমান, খন্দকার বেনজীর আহমেদ, এ কে এম সফিউল্লাহ, শাহ আলম, দেলোয়ার হোসেন, বেস্ট এভিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান এম হায়দার উজ জামান, উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন, সাবেক প্রধান অর্থ কর্মকর্তা কাজী ফজলুল করিম এবং সাবেক কর্মকর্তা মোল্লা আল আমীন।
আত্মসাতের ঘটনায় সহযোগী হিসেবে আরও অভিযুক্ত হচ্ছেন- বনানীর ইসলাম ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের শফিউল ইসলাম, বাগেরহাটের জিয়াউল হক মোল্লা, জেসমিন আক্তার, ফিরোজ আলম, শাহাজাদপুরের সেতু এন্টারপ্রাইজের সিকদার কবিরুল ইসলাম, বনানীর মমতাজ এন্টারপ্রাইজের ওমর ফারুক, ডিভেক রিয়েল এস্টেটের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন, ডেসটিনি গ্রুপের কন্ট্রোলার সুনীল বরণ কর্মকার, ডেসটিনি-নিহাজ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস সহিদুজ্জামান, ডায়মন্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান, ডেসটিনি এয়ার সিস্টেমসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আকতার ও ডেসটিনি গ্রুপের অ্যাডভাইজার শফিকুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯, নভেম্বর ০৫, ২০১৫
এমআই/আরএ