ঢাকা: বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মহাব্যবস্থাপক খন্দকার মিল্লাতুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) অনুসন্ধানের বিষয়টি দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র বাংলানিউজকে নিশ্চিত করে।
সূত্র জানায়, চার পাতার একটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ মাস দুয়েক আগে দুদকে দেওয়া হলে কমিশন তা যাচাই করে সম্প্রতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য দুদকের উপ-পরিচালক আবদুস সোবহানকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে কমিশন।
জানা গেছে, শিগগিরই প্রয়োজনীয় নথিপত্র তলব করে নোটিশ পাঠাবেন দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা।
বিনা টেন্ডারে একই স্টেশন থেকে জ্বালানি তেল নেওয়া, এক ট্রিপের স্থলে তিন ট্রিপের বালু উত্তোলন এবং যানবাহন বসে থাকলেও জালিয়াতি করে জ্বালানি তেলের বিল নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে মিল্লাতুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ডিএসসিসিতে একটি চক্রের মাধ্যমে তিনি এসব দুর্নীতি করছেন বলে দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ডিএসসিসির মহাব্যবস্থাপক খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার দ্বারা কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি হয়নি। যেসব অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে এগুলো করার এখতিয়ার আমার নেই। আমি চাইলে তো আর সব করতে পারি না। ’
একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে এসব করাচ্ছে বলেও পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
জানা গেছে, ১৯৮০ সালে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে শিশু পার্কের ‘মালি’ হিসেবে কাজ শুরু করেন খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম। পরবর্তীতে বিভিন্ন পদে চাকরি করে বর্তমানে ডিএসসিসির পরিবহন শাখার সর্বোচ্চ পদ মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) চলতি দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
দুদকে পেশ হওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, ডিএসসিসির পরিবহন বিভাগে জ্বালানি খরচের নামে চলছে হরিলুট। করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বছরের পর বছর ধরে এ লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে রাখায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিনা টেন্ডারে বছরের পর বছর ধরে একই স্টেশন থেকে জ্বালানি নেওয়া, এক ট্রিপের স্থলে তিন ট্রিপের বিল তোলা, যানবাহন বসে থাকলেও জ্বালানি ইস্যু করা, একই দূরত্বে বিভিন্ন পরিমাপের জ্বালানি ইস্যু করা, কেপিএল (কিলোমিটার পার লিটার) নির্ধারণ না করেই ইচ্ছামাফিক বরাদ্দ দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। পরিবহন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ফিলিং স্টেশন মালিক আর পরিবহনচালক ইউনিয়নের গুটিকয়েক নেতা নিয়ে এ সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়েছে। এ সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্টরা এতটাই প্রভাবশালী যে, নিয়ম ভঙ্গ করেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত যানবাহনগুলো তাদের দায়িত্বে রেখেছেন। ডিএসসিসি প্রতি মাসে ৪১০টি যানবাহনে প্রায় তিন কোটি টাকা জ্বালানি খরচ দেখাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০০৭ সালে নগর ভবনে সেনাবাহিনী কর্তৃক টাস্কফোর্স বসার পরই খরচ অর্ধেকে নেমে এসেছিল, যা দুই বছর একই রকম ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৫
এডিএ/এমজেএফ