ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

প্রেসক্লাব থেকে শিক্ষামন্ত্রণালয় কতদূর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৫
প্রেসক্লাব থেকে শিক্ষামন্ত্রণালয় কতদূর ছবি: সোহাগ/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দূরত্ব কোয়াটার কিলোমিটার। শিক্ষকরা এমপিওর দাবিতে প্রায় দশ দিন অবস্থান ও অনশন পালন করছেন।

অথচ শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের নিজের লোক ভাবলেও একদিনের জন্যও দেখতে আসেননি বা প্রতিনিধি পাঠিয়ে খবর নেননি। শিক্ষকদের প্রশ্ন জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শিক্ষামন্ত্রণালয় কতদূর।

বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) বিকেলে বাংলানিউজকে কথাগুলো বলছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমপিও ভুক্তির দাবিতে অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

জয়পুরহাট থেকে এমপিও'র দাবিতে আসা আল হেরা একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা লুতকিয়ারা বেগম মুক্তা বলেন, মন্ত্রণালয় মনে করছে আমরা শিক্ষক নই। প্রায় ১৫ বছর হয়ে যাচ্ছে এই পেশায় আছি। তারপরও কোনো মূল্য পাচ্ছি না।

আক্ষেপ করে মুক্তা বেগম বলেন, নন-এমপিও স্কুল ও কলেজগুলোকে স্বীকৃতি দিয়ে আজ দায়িত্ব নিচ্ছেন না শিক্ষামন্ত্রী। এমন আক্ষেপ আন্দোলনরত সব শিক্ষকদের।

দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর থানার মধ্যপাড়া কলেজের শিক্ষক মো. সেলিম সরকার বলেন, আট বছর ধরে এ প্রতিষ্ঠানে রয়েছি। কোনো টাকা পাচ্ছি না। আর কতদিন বাবার কাছ থেকে টাকা নিব।

কোনোদিন রাস্তায় থাকিনি। এখন নিরুপায় হয়ে থাকছি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের অভিভাবক শিক্ষামন্ত্রী একদিনের জন্য এলেন না-বলে যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, মন্ত্রী বারবার বলেছেন তিনি আমাদের লোক। তারপরও একবারের জন্য আসলেন না। আমরা খুবই আশাহত।
মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কেউ দেখতে আসেনি। তাহলে কি আমাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেবে, এটা কি তার ইঙ্গিত আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

এদিকে রাতে খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় থাকতে শিক্ষকদের সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে মশা। তারপর ধূলাবালি তো রয়েছেই বলে জানান শিক্ষকরা।

টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলা থেকে এসেছেন নাসিমা আকতার। তিনি অভিরন্নেছা মহিলা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষিকা। তিনি বলেন, সংসার ও মাদ্রাসা চালাতে হচ্ছে। বাচ্চা মানুষ করতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় রাত্রীযাপন করছি।

এখানে যারা আন্দোলন করছেন তাদের অধিকাংশের চাকরির বয়স ১০ থেকে ১৮ বছর। তারা আর কতদিন টাকা ছাড়া কাজ করবেন অভিযোগ করে বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের সবার সনদের বয়স ৩০ বছরের উপরে। এ বয়সে এসে আমরা কি আর অন্য কোথাও কাজ করতে পারব?
এদিকে ২৬-২৭ অক্টোবর শহীদ মিনারে, ২৮-২৯ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন এবং ৩০ অক্টোবর থেকে ০৪ নভেম্বর পর্যন্ত আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন নন-এমপিও শিক্ষকরা।

অনশনরত অবস্থায় এ পর্যন্ত মোট ৭০ জন শিক্ষক অসুস্থ হন। এর মধ্যে বর্তমানে সাত জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

০৪ নভেম্বর (বুধবার) নাগরিক সমাজের অনুরোধে আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিলেও দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৫
এফবি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।