ঢাকা: দেশের সামাজিক নিরাপত্তা খাতের প্রশংসা করে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, এবার জাতিসংঘে এসডিজি অনুমোদনের সময় বলা হয়, প্রতিটি উন্নয়নশীল দেশকে নিজের অর্থায়নে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। আমাদের সরকার এ কাজটি বহু আগে থেকেই করে আসছে।
বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) পরিকল্পনা কমিশনের অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশলপত্র’ নামক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, মাথাপিছু কম বরাদ্দ দিয়ে বেশি সুবিধাভোগী, নাকি মাথাপিছু বেশি বরাদ্দ দিয়ে কম সুবিধাভোগী নেব, তা অবশ্যই নীতি নির্ধারণের বিষয়। তবে প্রথমে সামাজিক সুরক্ষায় একটি টেকসই ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে।
স্পিকার এ সময় উদাহরণ টেনে বলেন, দরিদ্র শিশুদের স্কুলগামী করতে ইউনিসেফ একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিলো। এ প্রকল্পের আওতায় দশ হাজার শিশুর স্কুলের খরচ বাবদ প্রত্যেককে মাসে এক হাজার পাঁচশ টাকা করে দেওয়া হয়। এর ফলে স্কুলগামী শিশুর সংখ্যা এখন বাড়ছে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা বিধবা ভাতা বাবদ মাসে একশ টাকা করে দিতাম। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচশ টাকায়। একইভাবে হতদরিদ্ররা এখন মাথাপিছু মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছেন। এসব উদাহরণে একটাই নির্দেশনা পাওয়া যায়। আর তা হলো, আমাদেরকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে সামাজিক সুরক্ষা খাত নানাভাবে এগিয়ে নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু ফান্ডও গঠন করেছি। এটা কম অর্জন নয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, জীবন চক্রের বিভিন্ন ঝুঁকিকে হিসেবে নিয়ে তা মোকাবেলা করতেই সরকার জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশলপত্র হাতে নিয়েছে।
তিনি বলেন, বাঙ্গালী ফিনিক্স পাখির মতো মৃত্যুহীন। এ জাতি সবই অর্জন করতে পারে। প্রয়োজন শুধু সঠিক দিক নির্দেশনার। বর্তমান সরকার সেই কাজটি করে যাচ্ছে। আমি আবারও জোর গলায় বলছি, ২০৩০ সালের আগেই এ দেশ ক্ষুধা ও দরিদ্র মুক্ত হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক এম এম আকাশ তার বক্তব্যে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপণ করে বলেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সামাজিক সুরক্ষা খাতে সরকার ৩৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। সরকার এখন চাইছে ৮ কোটি লোককে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনতে। এতে করে প্রত্যেকের ভাগে বছরে ৩ হাজার ৮৩০ টাকা করে পড়ে। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা ৮ কোটি মানুষকে সামাজিক সুরক্ষা দেব, নাকি চরম দরিদ্র দুই কোটি মানুষকে বছরে ১৫ হাজার ৩২০ টাকা করে দেব।
সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন বলেন, হতদরিদ্র, পশ্চাদপদ- এসব প্রত্যয়গুলো উঠিয়ে দিতেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম জীবনচক্র ভিত্তিক হওয়ায় শহর ও গ্রামের বৃদ্ধ জনগোষ্ঠীকে বেশি করে এর আওতায় আনতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৫
এমআইএস/আরএইচ