ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেটে স্বামীর স্বীকারোক্তি

‘পরকীয়ায় জড়ানোয় স্ত্রীকে হত্যা’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৫
‘পরকীয়ায় জড়ানোয় স্ত্রীকে হত্যা’ পুতুল বেগম

সিলেট: পরপুরুষের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ানো স্ত্রী পুতুল বেগমকে হত্যা করেন স্বামী উমর ফারুক দোলন। হত্যার পর মরদেহ কর্মস্থলের পাশ্ববর্তী জঙ্গলের খালে ফেলে রেখেছিলেন।



গত ১৯ অক্টোবর স্ত্রী পুতুলকে মোবাইল ফোনে জৈন্তাপুর আলুরতল ব্লক ফ্যাক্টরিতে ডেকে নিয়ে খুন করেন তিনি। খুনের আগে বাসা থেকে একসঙ্গে বের হন তারা।
বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) বিকেলে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ম আদালতের বিচারক কুদরত ই খোদার কাছে স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন উমর ফারুক দোলন।

গত ৩১ অক্টোবর জৈন্তাপুরের জাফলং ভ্যালি স্কুল এলাকার সংলগ্ন ওই খাল থেকে দোলনের স্ত্রীর দেহের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। ময়না তদন্তের পর কঙ্কালটি নগরীর মানিকপীর (র.) মাজারে দাফন করা হয়।  

দোলনের জবানবন্দির বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, ১৯ অক্টোবর স্ত্রীকে খবর দিয়ে জৈন্তাপুরের আলুরতল ব্লক ফ্যাক্টরির বাসায় নেন দোলন। সেখানে দু’জনের মধ্যে সাংসারিক কথাবার্তা হয়। স্ত্রীকে নিয়ে এক পর্যায়ে আলুরতল জঙ্গলের ভেতরে যান। সেখানে কথাবার্তার একপর্যায়ে পুতুলের সঙ্গে আরেকজনের সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চান দোলন। পুতুল এ সম্পর্কের কথা অস্বীকার করায় উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে দোলন উত্তেজিত হয়ে পাথর দিয়ে স্ত্রীর মাথায় তিন-চারটি আঘাত করলে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন পুতুল। এরপর দোলন মরদেহ ফেলে আসেন জঙ্গলের একটি খালে।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য  দোলনকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জৈন্তাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিনয় ভূষণ। সন্ধ্যা ৬টা ২৪ মিনিটে জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক।

জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিউল কবির বাংলানিউজকে বলেন, ১৯ অক্টোবর মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন পুতুলের বাবা নগরীর নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকার শফিক মিয়া।

৩১ অক্টোবর নারীর কঙ্কাল উদ্ধারের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ ও আলামত হিসেবে চুড়ি পাওয়ার সংবাদে সাধারণ ডায়েরির কপিসহ পুতুলের বাবা শফিক মিয়া ভাই বায়েজিদ থানায় আসেন। সেখানে প্রথমে তারা পুলিশের কাছে রাখা চুড়ি দেখতে পান। ওই চুড়ি দেখার পরই তারা নিশ্চিত হন, এটি পুতুলের।

একপর্যায়ে পুতুলের মায়ের হাতে থাকা চুড়ির সঙ্গে মিলে যায়। এর সূত্র ধরেই পুতুলের স্বামী দোলনকে গ্রেফতার করেন বলে জানান ওসি সফিউল কবির।

তিনি আরও বলেন, কঙ্কালটি নিহত পুতুলের। তিনি সিলেট নগরীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়া পদে চাকরির পাশাপাশি মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন। আলামত হিসেবে সংগৃহীত একই ধরনের চুড়ি পুতুলের মায়ের হাতেও রয়েছে। মেলা থেকে শখ করে মেয়েকে সোনালী রংয়ের চুড়ি ও অন্তর্বাস কিনে দিয়েছিলেন মা আনোয়ারা বেগম। এ দু’টি উপকরণ দেখেই কঙ্কালটি পুতুলের বলে শনাক্ত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৫
এনইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।