ঢাকা, রবিবার, ২১ পৌষ ১৪৩১, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার

মহাকাশ শিক্ষার এক অনন্য প্রতিষ্ঠান

সুকুমার সরকার, সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৫
মহাকাশ শিক্ষার এক অনন্য প্রতিষ্ঠান ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে প্রদর্শনীর সবটাই বিজ্ঞানভিত্তিক। এখানে দেখানো হয় আমাদের বিশাল মহাকাশের তারা-নক্ষত্রের সারা বছরের গতিবিধি ও অবস্থান।



শিশু-কিশোর ও শিক্ষার্থীরা বেশি এলেও এখানে বড়দের জন্যও শিক্ষণীয় অনেক কিছুই আছে।

রাজধানীর সংসদ ভবন সংলগ্ন বিজয় সরণি অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর।

নভোথিয়েটারের সাপ্তাহিক ছুটির দিন বুধবার এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতেও বন্ধ থাকে। প্রদর্শনীর সময়সূচি শনিবার, রোববার, সোমবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার অফিস সময়কালে।

বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের মহাপরিচালক আরশাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, রাষ্ট্রীয়  এ নভোথিয়েটারে আসা শিশুরা বিনোদনের মাধ্যমে নানা এক্সিবিটস উপভোগের পাশাপাশি সৌরজগৎ, বিজ্ঞান এবং ইমার্জিং বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামমুখর জীবনীও জানতে পারছে।

মহাকাশ সম্পর্কে অন্ধ বিশ্বাস আর কুসংস্কার দূর করার কাজে প্লানেটরিয়াম প্রদর্শনীর মাধ্যমে  মহাকাশের অজানা আর অসাধারণ সব ঘটনা শিক্ষার্থীদের জানানো হচ্ছে। দেশের একমাত্র এই প্লানেটরিয়ামটি বিভিন্ন সায়েন্টিফিক এবং ডিজিটাল প্রদশর্নীর মাধ্যমে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়কে শিক্ষার্থীদের কাছে বিনোদনের মাধ্যমে পৌঁছে দিচ্ছে।

আরশাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, পরমাণু বিজ্ঞান সম্পর্কে জনমনে ভীতি দূর করার জন্য এখানে নানা ধরনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার দেখানো হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা  বিজ্ঞান এবং কিভাবে বিজ্ঞান জনগণের কল্যাণে ব্যবহৃত হচ্ছে সেসব বিষয় বিনোদনের  মধ্যে দিয়ে শিখতে পারছে।

ফলে তারা  বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে উঠছে এবং এভাবেই দেশের ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানী গঠনে নভোথিয়েটার নিরলস প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকরাও নভোথিয়েটারের বিভিন্ন প্রদর্শনী উপভোগ করছে।

বিশ্বের সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে চলতে বর্তমান সরকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছে। দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করার লক্ষ্য নিয়ে প্রণীত হয়েছে 'ভিশন-২০২১' ।

মহাপরিচালক বলেন, তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনে সরকার নিরলস  প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে দেশ আজ দ্রুত তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হচ্ছে। মোবাইল ফোনের ব্যাপক ব্যবহার, ফ্রি-ল্যান্সিংয়ের প্রসার, এ খাতে ক্রমবর্ধমান বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং মানুষের কর্মকাণ্ডে সময় ও  অর্থের পরিমাণ লাঘব তারই প্রমাণ।
 
তিনি বলেন, দেশকে এ ধারায় আরও বেগবান করতে প্রয়োজন বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠন। আর এ জাতি গঠনে প্রয়োজন দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যাপারে আগ্রহী করে তোলা। বিজ্ঞান কিভাবে মানুষের কল্যাণ সাধন করে সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা। সেজন্য প্রয়োজন বিজ্ঞানের চমৎকারিত্ব আর বিশাল সম্ভাবনাকে তাদের কাছে তুলে ধরা এবং বিজ্ঞান শিক্ষাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা। কিন্তু গতানুগতিক বিজ্ঞান শিক্ষার পদ্ধতির মাধ্যমে সেটি যথাযথভাবে কার্যকর করা সম্ভব নয়।

শিক্ষার্থীরা যাতে সানন্দচিত্তে এবং গভীর আগ্রহ নিয়ে বিজ্ঞান শিক্ষায় ব্রতী হয় এবং বিজ্ঞানকে যথাযথভাবে আত্মস্থ করতে পারে সেজন্য প্রয়োজন অনানুষ্ঠানিক বিনোদনের মাধ্যমে বিজ্ঞান শিক্ষা শিক্ষার্থীদের অন্তরের গভীরে পৌঁছে দেওয়া বলেও মনে করেন তিনি।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ তথা বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রয়াসে নভোথিয়েটার তার নিজস্ব উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে যাবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার বিভাগীয় পর্যায়ে সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের শাখা স্থাপন প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন আছে।    রংপুর শাখা স্থাপনের জন্য জমি নির্ধারণ করা হয়েছে।

খুলনায় শাখা স্থাপনকল্পে জমির প্রস্তাব জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে পাওয়া গেছে। অর্থাৎ জমি হস্তান্তরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সিলেট বিভাগে নভোথিয়েটারের শাখা স্থাপনের জন্য জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে এ জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

দেশের দক্ষিণের জনপদ বরিশাল বিভাগে নভোথিয়েটারের শাখা স্থাপনের জন্য জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন আছে।     

দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম বিভাগেও নভোথিয়েটারের শাখা স্থাপনের জন্য জমি সংগ্রহের প্রচেষ্টা  অব্যাহত রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়:  ০৯৫৮ ঘণ্টা,  ডিসেম্বর ১৩, ২০১৫
এসএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।