ঢাকা, রবিবার, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকার মাঠে কাঠবিড়ালির ‘সুপারম্যানের’ লাফ!

ছবি: খায়রুল আলম রাজীব, স্টাফ ফটো করেসপন্ডেন্ট, লেখা: সৈয়দ ইফতেখার আলম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৬
ঢাকার মাঠে কাঠবিড়ালির ‘সুপারম্যানের’ লাফ! ছবি: রাজীব / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রাজধানী ঢাকার রাস্তায় সাঁ করে গাড়ি যতটা গতি পায়, ঠিক তেমনই গতি তার নেমে আসায়। হঠাৎ খালি চোখে দেখে ভড়কে ওঠা! এ কী! চোখ কচলে অনুভব— ঢাকার মাঠে কাঠবিড়ালির লাফালাফি...।

আসলেই তো তাই।



রাজধানীর রমনা পার্কের বড় একটি বৃক্ষ থেকে নেমে এলো সেই কাঠবিড়ালি (মৎস্য ভবন অংশের রমনা উদ্যান)। হরহামেশা এমন দৃশ্য ধরা পড়ে না চোখে কিংবা ক্যামেরার লেন্সে। সময় তখন বেজায় ভোর। শীতের কাঁপুনি ধরা ক্ষণে হয়ত খাবারের সন্ধানে তার দলছুট এগিয়ে চলা। মাথা উঁচু করে দূরে দৃষ্টি নিক্ষেপ।




প্রথমে তার সঙ্গী পাখি। তাদের দিকে চাহনি ছিল এমনভাবে যেন- প্রতিদিনের চেনা। তারপর পাশঘুরে একটু খানি পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা।



এদিকে চিক চিক রোদের কারণে আরও সুন্দর থেকে সুন্দরতম হয়ে ওঠে কাঠবিড়ালিটি। সাধারণত এ প্রাণীর দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ম এবং গাছের ডালপালার মধ্যকার দূরত্ব মাপার মতো প্রখর বোধশক্তি। সেটিকে কাজে লাগিয়ে তার খাদ্য খোঁজার অভিযান তখনও অব্যাহত।



শেষে কী যেন খুঁজে পাওয়া! তবে তা আন্দাজ করা না গেলেও, খুশি মনে কাঠবিড়ালির লাফ ছিল উপভোগ্য! গাছে দ্রুত লাফে সে এমনভাবে উঠলো যেন ‘সুপারম্যান কাঠবিড়ালি’!





বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই প্রাণীটি মূলত বৃক্ষবাসী স্তন্যপায়ী। দেশে বৃক্ষ-জঙ্গল যতই কমছে, তারাও হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি থেকে। রোডেনশিয়া বর্গের স্কিউরিডে গোত্রের অনেকগুলো ছোট বা মাঝারি আকারের প্রজাতির অন্যতম তারা। এই বর্গের স্কিয়ারাস এবং টামিয়াস্কিয়ারাস প্রজাতিকেই কাঠবিড়ালি বলা হয়।



রমনা উদ্যানে দীর্ঘ কয়েক দশক থেকে হাঁটতে আসা এক বৃদ্ধ জানালেন, আগে সংখ্যায় অনেক দেখা গেলেও এখন হাতে গোনা কয়েকটি কাঠবিড়ালি রয়েছে পার্কে। এর সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ পরিবেশ দূষণ এবং গাছ কেটে ফেলা। সঙ্গে অধিক কোলাহল বা শব্দ দূষণ।



জাতীয় কবির ভাষায়: ‘কাঠবিড়ালি কাঠবিড়ালি পেয়ারা তুমি খাও’? কাজী নজরুলের খুকি ও কাঠবিড়ালি কবিতায় কাঠবিড়ালিকে খুকির প্রশ্ন ছিল এমনটাই। কিন্তু এই রমনায় যে তাদের জন্য পেয়ারা কী, সাধারণ উচ্ছিষ্টই জোটে না, সে বিষয়ে কারো দৃষ্টি কি আছে?



রাজধানী ঢাকা দূষণের, কোলাহলের, ময়লা-আবর্জনা দিয়ে ভরপুর— কতই না অভিযোগ নগরবাসীর! কিন্তু এ ঢাকাই তো একদিন ছিল সবুজে-শ্যামলে, শান্ত-সুন্দর। যেখানে রূপের ছিল বৈচিত্র্য, ঠিক উন্নয়নও হতো পরিমিত পরিবেশবান্ধব। আসলে সে ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা গেলে ক্ষুদ্র প্রাণিকুলের জীবন রক্ষাই শুধু নয়, সর্বপরি বাঁচবে মানুষ ও মানবতা।



বাংলাদেশ সময়: ০০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৬
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।