ঢাকা, সোমবার, ২৯ পৌষ ১৪৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বিশ্ব মানবিক সহায়তা

ইইউ’র সর্ববৃহৎ অর্থ বরাদ্দের তালিকায় নেই বাংলাদেশ

জেসমিন পাপড়ি, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৬
ইইউ’র সর্ববৃহৎ অর্থ বরাদ্দের তালিকায় নেই বাংলাদেশ

ঢাকা: সম্প্রতি বিশ্বে মানবিক সহায়তায় সর্ববৃহ‍ৎ অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে ইইউ’র সর্বকালের এ বৃহৎ অর্থ বরাদ্দের তালিকায় বাংলাদেশের নাম স্থান পায়নি।

যেখানে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে।

জানা গেছে, মানবিক সহায়তায় এবারই রেকর্ড পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে ইইউ। প্রাথমিকভাবে এর পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১শ ১০ কোটি ইউরো।

বিশ্বজুড়ে শরণার্থীর সংখ্যা দিন দিন ব্যাপকহারে বাড়ছে। সেই সঙ্গে সশস্ত্র যুদ্ধের কারণে বাস্তুহারা হচ্ছে মানুষ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণেও মানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। মানবসৃষ্ট সঙ্কট, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, দুর্যোগ পরবর্তী সহায়তা এবং এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নিতে এ বিশাল অংকের অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন।

২০১০ সালে সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় প্রথম ছিলো বাংলাদেশ। তবে এখন বাংলাদেশের অবস্থান নেমে এসেছে ছয় নম্বরে। অর্থাৎ জলবাযু পরিবর্তনজনিত কারণে আর্থিক ক্ষতি কমছে। এছাড়া অন্য দেশের ক্ষতির পরিমাণ যে হারে বাড়ছে, সে তুলনায় বাংলাদেশের এ ক্ষতি হয়নি। তবে অর্থের ক্ষতি কমলেও ঝুঁকি এখনও থেকেই গেছে।

গত দুই দশকে বাংলাদেশের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তিন হাজার ১শ ২৮ মিলিয়ন ডলার, যা মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রায় এক দশমিক ২০ শতাংশ। এছাড়া সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশে প্রায় ২শ ২৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।

রেকর্ড পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হলেও মানবিক ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশকে কেন এ তালিকায় রাখা হলো না, ইমেইলে এমন প্রশ্ন করা হয়েছিলো ইউরোপীয় কমিশনের কাছে।

তার জবাবে ইউরোপীয় কমিশনের মানবিক সহায়তা ও সঙ্কট ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কমিশনার ক্রিসটোস স্টাইলিয়ানাইডসের পক্ষে মেম্বার অব কেবিনেট ম্যাথিউ ব্রায়েন্স বাংলানিউজকে  জানান, বাংলাদেশের জন্যও অর্থ সহায়তা বরাদ্দ দেওয়া হবে। এর ঘোষণা খুব শিগগিরই আসছে। ইইউ’র মানবিক সহায়তা পক্ষপাতিত্বহীন ও স্বাধীন। এ বরাদ্দ সম্পূর্ণ প্রয়োজনের উপর দেওয়া হয়ে থাকে। অর্থ সহায়তা বরাদ্দের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি ও তার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। উদাহরণ হিসেবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া উল্লেখযোগ্য।

এদিকে, ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত নেপাল বা শীর্ষ ঝুঁকির তালিকায় থাকা বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো, ইইউ’র মানবিক সহায়তার বিশাল এ অংকে জায়গা না করতে পারলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশকিছু দেশ এতে স্থান করে নিয়েছে। কলোম্বিয়া, মিয়ানমার ও আফগানিস্তানের বাস্তুহারা জনসাধারণ ২০১৬ সালে ইইউ থেকে মানবিক সহায়তা পাবে। এর বাইরে ভিয়েতনাম, লাউসসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্য দেশ প্রকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় অর্থ বরাদ্দ পাবে। এছাড়া সিরিয়া, লেবানন, জর্ডান, তুরস্ক, ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্যের শরণার্থীদের মানবিক সহায়তায় বেশ বড় বরাদ্দ রাখছে ইইউ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৬
জেপি/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।