ঢাকা: সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদগুলোর (ইউপি) নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাটাই বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে অধিক সংখ্যক ফোর্স মোতায়েনের কথা ভাবছে সংস্থাটি।
ইসি’র নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার দেওয়া তথ্যমতে, দেশে নির্বাচন উপযোগী ইউপির সংখ্যা ৪ হাজার ২৭৯টি। অন্তত ১১ দফায় ভাগ করে এসব ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন করবে ইসি। যা আগামী ২৮ মার্চের মধ্যেই শুরু হবে।
প্রথম দফায় অন্তত ৪ শতাধিক ইউপিতে ভোটগ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এসব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, ইউপি নির্বাচনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ। কেননা, একেবারে গ্রাম পর্যায়ের এ স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে প্রায় সকল প্রার্থীই প্রভাবশালী হয়ে থাকেন। এছাড়া এখানে বংশগত, সম্প্রদায় ইত্যাদি ‘ইজম’ ব্যাপক কাজ করে। প্রার্থীদের মাঝে প্রভাব বিস্তারের ব্যাপক প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। ফলে সহিংসতার ঘটনাও ঘটে বেশি।
এছাড়া এবারই প্রথম ইউপিতে দলীয়ভাবে চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ হবে। এক্ষেত্রে আরো নতুন একটি পক্ষ যোগ হয়েছে এ নির্বাচনে। সব মিলিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে বেগ পেতে হবে।
তাদের মতে, ২০০৩ সালের ইউপি নির্বাচনের সময় দুই শতাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছিলো। এছাড়া ২০১১ সালের ইউপি নির্বাচনের সময়ও ব্যাপক সহিংস ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছিলেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।
মূলত এ বিষয়টিই সবচেয়ে বেশি ভাবিয়ে তুলছে কমিশনকে। এক্ষেত্রে সংস্থাটি সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনগুলোর তুলনায় সবচেয়ে বেশি ফোর্স মোতায়েনের কথা ভাবছে।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ওপর। এক্ষেত্রে সহিংস ঘটনা মোকাবেলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক সদস্য মোতায়েন করা হবে।
তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, সরকারি সুবিধাভোগী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে সংসদ সদস্য বা মন্ত্রীরা যাতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন না করতে পারেন- সেজন্যও কঠোর নির্দেশনা থাকবে। এক্ষেত্রে এবার আর শো’কজ করা হবে না। ক্ষেত্রমতে রিটার্নিং কর্মকর্তা বা নির্বাচনে নিয়োজিত নির্বাহী বা বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরাই সরাসরি দণ্ডমূলক ব্যবস্থা নেবেন।
এদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রেখে নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছিলো ইসি। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় তাতে অনুমোদন দেয়নি। ফলে নির্বাচনী সংহিসতা রোধে সরাসরি পদক্ষেপ নিতে ইসি’র হাতে তেমন কোনো অস্ত্রই থাকছে না।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, অন্য সকল নির্বাচনে সকল ক্ষমতা রিটার্নিং কর্মকর্তার হাতে ন্যস্ত থাকলেও প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা ইসির হাতেই থাকে। কিন্তু এ নির্বাচনে তা না থাকলে মাঠ পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৬
ইইউডি/এএসআর