বগুড়া: রাত ১২টা ১ মিনিট। ঘড়ির কাটা সময়টি নির্দেশ করলেই মহান ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহর শুরু হবে।
ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছিলেন বাঙালি জাতি সেইসব ভাষাশহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানাবে। সেদিনের সেই বীরসেনানীদের শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার প্রাঙ্গন ছেয়ে দেবেন ফুলে ফুলে।
আর দিবসটি ঘিরে চারদিকে চলছে ফুল বিক্রির ধুম। ফুল ব্যবসায়ীদের যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। অর্ডারের ফুল দিতেই তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। আবার অর্ডার ছাড়াও অসংখ্য ক্রেতা ফুল কিনতে আসছেন। পছন্দের ফুল কিনছেন।
সব মিলিয়ে চলছে ফুল মার্কেটে ফুল বিক্রির উৎসব।
শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বগুড়া শহরের খোকন পার্ক রোডের ফুল মার্কেটে গিয়ে ফুল ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র উঠে আসে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এ মার্কেটে ১৭ জন ফুল ব্যবসায়ী রয়েছেন। প্রত্যেকেই বিভিন্ন আকারের ফুলের মালা তৈরি করতে চরম ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসবের মধ্যে বড়, মাঝারি ও ছোট আকারের ফুল মালা রয়েছে। মালাগুলোতে গাঁদা, গোলাপ, রজনীগন্ধাসহ বাহারি সব ফুল সুন্দর করে বসানো হয়েছে। আবার কাউকে কাউকে শহীদ মিনার সম্বলিত ফ্রেম রকমারি ফুল দিয়ে সাজাতে দেখা যায়।
একুশে ফেব্রুয়ারির কথা মাথায় রেখে এখানকার ব্যবসায়ীরা আগে থেকেই বেশি করে ফুল সংগ্রহে রেখেছেন। এ মার্কেটে নিয়মিত ক্রেতার পাশাপাশি অনেক নতুন ক্রেতার পদচারণায়ও চোখে পড়েছে।
লাভলী ফুল ঘরের স্বত্ত্বাধিকারী রহমান মিয়া, পুস্পিতা ফুল ঘরের সুমন বাংলানিউজকে জানান, ফুল ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। তাই বছরের বারো মাসই এ মার্কেটে ফুল কেনাবেচা হয়। তবে বিশেষ দিবসগুলোতে এখানে প্রচুর ফুল বিক্রি হয় বলে তারা জানান।
অনামিকা ফুল ঘরের স্বত্ত্বাধিকারী কাজল দাস ও জুয়েল ফুল ঘরের স্বত্ত্বাধিকারী রমজান আলী বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর মহান ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সরকারি-বেসরকারি, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির পক্ষ থেকে ফুলের মালার প্রচুর অর্ডার আসে। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
জেলার অধিকাংশ উপজেলা থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এসে অর্ডার দিয়ে এখান থেকে ফুল বা ফুলের মালা কিনে নিয়ে যান। বড় আকারের একেকটি ফুলের মালা ৮০০-১০০০ টাকা, মাঝারি আকারের ৬৫০-৭০০ টাকা ও ছোট আকারের ফুলের মালা ৩০০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাঙা ও শুভ নামের দু’জন যুবক ধুনট উপজেলা থেকে এ মার্কেটে ফুলের মালা কিনতে এসেছেন। ‘সার্কেল’ নামে তাদের একটি সামাজিক সংগঠন রয়েছে।
তারা বাংলানিউজকে জানান, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাতে জানাতে তারা ফুল কিনতে এসেছেন। যারা মায়ের ভাষার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই হবে। আর সেই শ্রদ্ধা জানানোর জিনিসটি অবশ্যই মনের মতো হওয়া প্রয়োজন। তাই তারা এখানে ফুল কিনতে এসেছেন বলে জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬
এমবিএইচ/এএসআর