ঢাকা: প্রত্নত্বত্ত্বের পুরোধা পুরুষ আকুল কালাম মোহাম্মদ (আ ক ম) যাকারিয়াকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। রাজধানীর সমরিতা হাসপাতালে গত ৩ মাস ধরে চিকিৎসাধীন এই ইতিহাসবিদকে ক’দিন ধরেই ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিলো।
পুঁথিসাহিত্যবিশারদ ও ফারসি ভাষার অনুবাদক আ ক ম যাকারিয়া গত ২৬ নভেম্বর থেকে সমরিতা হাসপাতালে ডা. মামুনুর রশিদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
প্রায় শত বছর বয়সী (৯৮ বঠছর ৫ মাস) আ ক ম যাকারিয়া ভুগছেন বার্ধক্যজনিত নানা জটিল রোগে। এর মধ্যে ফুসফুস সংক্রান্ত ব্যধিই বেশি কাবু করে ফেলেছে এ বঙ্গের এ কৃতি সন্তানকে।
শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয় বলে জানান আ ক ম যাকারিয়ার মেঝ ছেলে মারুফ সমশের যাকারিয়া। মঙ্গলবার তিনিই লাইফ সাপোর্টের কথা জানান।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, প্রচুর বমি হওয়ায় বাবার ফুসফুস ঠিক মত কাজ করছিল না। অতিরিক্ত অক্সিজেন দিয়েও ফুসফুসের ক্রিয়া স্বাভাবিক করা যাচ্ছিল না। কিডনির ব্লাড সার্কুলেশনও ঠিক মত হচ্ছিল না। পরে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে লাইফ সাপোর্ট দিতে হয়েছে।
গত ৩ বছর ধরেই অসুস্থ আ ক ম যাকারিয়া। রাজধানীর কলবাগানের ১৬ লেক সার্কাস’র বাসা ও হাসপাতালেই কাটছে তার শেষ ৩ বছর। সর্বশেষ গত ২৬ নভেম্বর থেকে টানা ২ মাস ২২ দিন এক নাগাড়ে পড়ে আছেন সমরিতা হাসাপাতালের ৯৭৩ নম্বর কেবিনে।
একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়েও ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব চর্চায় অনন্য-অসাধারণ অবদান রেখেছেন আ ক ম যাকারিয়া।
গুণি এ মানুষটির কর্মজীবন শুরু হয়েছিল শিক্ষকতা দিয়ে। ১৯৪৬ সালে বগুড়ার আজিজুল হক কলেজে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের প্রভাষক হিসেবে চাকরি জীবন শুরু হয় তাঁর। প্রায় পৌনে দুই বছর সেখানে কাজ করার পর যোগ দেন সিভিল সার্ভিসে।
১৯৭৬ সালে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে কর্মজীবন থেকে অবসরে যান আ ক ম যাকারিয়া।
বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে প্রত্নতত্ত্ব ও পুতিসাহিত্য চর্চা ও অনুবাদ সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন একুশে পদক ও আমিন জুয়েলার্স গুণীজন সম্মাননা।
এর আগে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি, ইতিহাস পরিষদ ও ইতিহাস একাডেমি পদক।
এ ছাড়া এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ ম্যান অব দ্য ইয়ার গোল্ড মেডেল দিয়েছে তাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৬
এজেড/জেডএম
** আইসিইউতে আ ক ম যাকারিয়া
** ৯৭৩ নম্বরে ২ মাস ২২ দিন আ ক ম যাকারিয়া