ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

এশীয় অবকাঠামো উন্নয়নে এআইআইবি বিল পাস

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৬
এশীয় অবকাঠামো উন্নয়নে এআইআইবি বিল পাস

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: এশিয়ার দেশগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকের অংশীদার হতে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) নামে একটি বিল পাস হয়।



অর্থমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বিলটি পাসের জন্য উত্থাপন করেন। যদিও বিলের ওপর বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম, নুরুল ইসলাম ওমর, রওশন আরা মান্নান এবং স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন জনমত যাচাই-বাছাই করার প্রস্তাব দেন।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী তাদের প্রস্তাবের ওপর ব্যাখা দেন। এরপর জনমত যাচাই-কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব নাকচ হলে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী। পরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলটি পাসের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে দিলে তা সর্বাধিক সংখ্যক সদস্যের ভোটে পাস হয়।

এমপিদের যুক্তিতর্কে জবাব দিতে গিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাম-ডান বলে কেন যুক্তি তর্ক হচ্ছে? আমরা আমাদের পুরনো বন্ধু রেখেই নতুন বন্ধু তৈরি করছি। আমাদের জন্য এটি একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। বিল পাসের পর রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করার পরই আইনটি কার্যকর হবে।  

এর আগে গত ০৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক বিল-২০১৬ উত্থাপন করা হয়। বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী বিলটি পাস হয়।
 
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়, এশিয়ার ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে চীন এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এআইআইবি’তে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে যোগ দিতে বাংলাদেশ ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে। ২০১৫ সালের ২৯ জুন বাংলাদেশসহ ৫৭টি সদস্য দেশ আর্টিকেল অব অ্যাগ্রিমেন্ট (এওএ) সই করে। গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে এওএ কার্যকর হয়েছে। এই ব্যাংকের সদস্য হওয়ায় বাংলাদেশেরও কিছু দায়-দায়িত্ব রয়েছে। যে কারণে নতুন আইন প্রণয়ন প্রয়োজন। যে কারণে এই বিলটি আনা হয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, এআইআইবি’র অনুমোদিত মূলধন ধরা হয়েছে একশ’ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সদস্য পদের জন্য বাংলাদেশকে শেয়ারমূল্য বাবদ ৬৬ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে হবে। এর মধ্যে পরিশোধিত মূলধন হিসেবে ১৩ কোটি ২১ লাখ ডলার এবং ৫২ কোটি ৮৪ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হবে অপরিশোধিত (কিস্তিতে) মূলধন হিসেবে। প্রতি কিস্তিতে ১০৫ কোটি ৬৮ লাখ পরিশোধ করতে হবে।

বিলে আরও বলা হয়েছে, এই ব্যাংকের উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রধানত অবকাঠামো এবং অন্যান্য উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে এশিয়ার টেকসই উন্নয়ন, সম্পদ সৃষ্টি এবং যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে উৎসাহিত করা। দ্বিপাক্ষিক ও বহুপক্ষীয় উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে কাজ করে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা।

উল্লেখ্য, গত ২১ ডিসেম্বর প্রস্তাবিত আইনটি মন্ত্রিপরিষদ নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয়। গত ১৯ জানুয়ারি আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে ভেটিং সম্পন্ন হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অনুমোদন দেন।

এর আগে গত ডিসেম্বরে এআইআইবি’র আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। এই ব্যাংকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কে কিয়াং উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও যোগ দেন। ব্যাংকের প্রথম প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন চীনের সাবেক অর্থমন্ত্রী জিন লিকুয়ান। বেইজিংয়ে সংস্থার সদর দফতরে ওই অনুষ্ঠানে ১২ জনকে পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৬
এসএম/এমজেএফ

** শিক্ষকদের বেতন গ্রেড নিয়ে কাজ করছে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি
** বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে ২৭ কর্মকর্তা জড়িত

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।