ঢাকা: ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আত্মবিশ্বাস ও দেশপ্রেম নিয়ে কর্তব্য পালন করতে নিজ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের গত ছয়মাসে অগ্রগতি পর্যালোচনাকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেন।
আশ্রায়ণ, বিনিয়োগ বোর্ড, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা কতৃপক্ষসহ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নানা প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা হয় বলে জানান তিনি।
ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে উন্নয়ন প্রকল্পের দ্রুত ও সফল বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
বৈঠকে কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশে এখনও ২ লাখ ৬৮ হাজার পরিবার চরম দারিদ্র্য সীমায় বাস করেন।
এসব পরিবারকে দারিদ্র্য চক্রের বাইরে নিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।
দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের সফলতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু শহরে নয়, গ্রাম এলাকাতেও দারিদ্র্য কমেছে।
সরকার সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করতে বিরামহীনভাবে কাজ করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই কেউ ঘর ছাড়া থাকবে না, কোনো কুড়েঘর থাকবে না।
এ জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিনা জামানতে ঋণ সহায়তাসহ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন খুবই দরকার।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ মহান নেতা শুধু দেশের স্বাধীনতার জন্য নয়, স্বাধীনতার পর তিনি দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ শুরু করেছিলেন।
‘আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে, দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে কাজ করছি,’ বলেন শেখ হাসিনা।
২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ গড়তে সরকারের নেওয়া সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
গত সাত বছরে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে মাথাপিছু আয় ১৩১৬ মার্কিন ডলারে উন্নীতকরণ, ৬.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ বিভিন্ন সফলতার কথা তুলে ধরেন তিনি।
সরকার সফলতার সঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, জিডিপি বাড়ার সঙ্গে সাধারণত মূল্যস্ফীতি বাড়ে। কিন্তু আমরা তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি।
উপজেলা পর্যায়ে অবকাঠামো উন্নয়নে নির্মাণে মাস্টার প্ল্যান করার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের অবস্থানগত ভৌগলিক গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ পূর্ব-পশ্চিমের সেতুবন্ধন হতে পারে।
এক্ষেত্রে বিবিআইএন মোটর ভেহিকল চুক্তি ও বিসিআইএম অর্থনৈতিক করিডোর বাস্তবায়নে তার সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
পর্যালোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
১৭৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রায়ণ প্রকল্পের অধীনে ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৮৮ পরিবারের পুর্নবাসনের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময় : ১৯৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৬
এমইউএম/এমএ