ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

প্রেমলীলার নিরাপদ স্থান লিনিয়ার পার্ক!

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৬
প্রেমলীলার নিরাপদ স্থান লিনিয়ার পার্ক! ছবি: ম‍ানজারুল ইসলাম/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: আকাশ মেঘলা। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে।

আর এই বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়েও চলছে প্রেম। কেউ বা পার্কের বেঞ্চে, কেউ বা গাছের আড়ালে। প্রেমলীলায় মগ্ন এসব তরুণ-তরুণীর ৯০ ভাগই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী। ক্লাস বাদ দিয়ে পার্কে বসে যারা রোমান্সে ব্যস্ত। ওদিকে আবার এক দল বখাটে যুবক প্রকাশ্যেই পার্কের ভিতর বসিয়েছে গাঁজার আসর। গাঁজার গন্ধে পার্কে দাঁড়ানোই যেন দায়।

বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে খুলনায় ময়ূর নদীর পাড়ের লিনিয়ার পার্কে সরেজমিন গিয়ে এমনই দৃশ্যের দেখা মেলে।

প্রেমলীলায় মত্ত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যেহেতু এই পার্কটি খুলনা মহানগরীর শেষ প্রান্তে, সেহেতু অভিভাবকদের নজর এড়াতে তারা এ স্থানটিকে নিরাপদ হিসেবে বেছে নিয়েছেন। আর  এ কারণে এ পার্কে দিন দিন প্রেমিক-প্রেমিকার জুটির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।  

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্রে জানা যায়, নগরবাসীর চিত্তবিনোদনের জন্য গল্লামারীর ময়ূর নদীর পাড়ে ২০০৯ সালে লিনিয়ার পার্কের নির্মাণ প্রকল্প নেয়া হয়। প্রায় ১৪ একর জমির ওপর ২০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পার্কটি নির্মাণ করা হয়। পার্কটির আর্কষণীয় দিক হলো, নদীর তীরঘেঁষে এটি ১ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার লম্বা। এর মধ্যে হাঁটার জন্য ওয়াকওয়েও রয়েছে। ২০১৪ সালের জুনে এর কাজও শেষ হয়েছে। কিন্তু পার্ক পরিচালনায় জটিলতা দেখা দেয়ায় তা আজ  পর্যন্ত উন্মুক্ত করা সম্ভব হয়নি। চালুর আগেই বখাটে আর মাদকসেবীদের নিরাপদ উদ্যান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে পার্কটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, পার্কের প্রবেশদ্বারের বাম পাশে ৫/৬টি দোকান, এন্টিপ্লাজা ও অফিস ভবন, পার্কিং চত্বর এবং একটি রেস্টুরেন্ট আছে। প্রধান ফটকের সামনেই রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা। ভেতরে রয়েছে চারতলা অবজারভেশন টাওয়ার, বাঘ ও হরিণের রেপ্লিকা, গরুর গাড়ি ও রাখালের ভাস্কর্য, ১০টি আমব্রেলা শেড, দুটি টয়লেট কমপ্লেক্স, একটি দৃষ্টিনন্দন সেতু, দুটি পিকনিক শেড, দোলনা, স্লিপার, জাম্পি প্যাডসহ শিশুদের খেলার সামগ্রী। তবে এসব খেলার সামগ্রী শিশুদের চেয়ে প্রেমিক-প্রেমিকাদের দখলেই থাকে বেশি।

পার্কের পাশের বাসিন্দা এনামুল হোসেন বলেন, অনেক রাত পর্যন্ত চলে গাঁজা সেবন, তাস এবং জুয়ার আসর। । মাঝে মাঝে এদের মধ্যে টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে হাতাহাতিও হয়। পুলিশ মাঝে মাঝে হানা দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। এসব বখাটে স্থানীয় এবং প্রভাবশালী হওয়ায় অনেকে মুখ খুলতে চান না।

তিনি জানান, স্কুল কলেজ বাদ দিয়ে ছেলেমেয়েরা ইউনিফর্ম পরে এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রেম করে।

পার্কের নিরাপত্তা প্রহরী নবীর আলী বাংলানিউজকে বলেন, বহিরাগতরা সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে ঢুকে মাদক সেবন করে। আবার অনেক স্থানে সীমানা প্রাচীর নেই। সেখান থেকে সহজেই ঢুকে পড়া যায়। আমরা বাধা দিলে আমাদের ভয়ভীতি দেখায়।

বাংলাদেশ সময় : ২০৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৬
এমআরএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।