জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, একজন মন্ত্রী, এমপি, পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তা ভুল করলে জেলে যেতে হয়। আর ভুল সংবাদ ছাপলে তার কিছু হবে না, এ আইন থাকতে পারে না।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি জানান।
ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহফুজ আনামের কথা উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, একজন মন্ত্রী, এমপি, পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা ভুল করলে জেলে যেতে হয়। আপনি (মাহফুজ আনাম) একজন রাজনীতিবিদের চরিত্র হনন করলেন। আমাদের ন্যাংটা করা হলো, তার (মাহফুজ আনাম) কিছু হবে না, এটা হতে পারে না। এ ধরনের আইন থাকতে পারে না।
এ সময় তিনি তথ্যমন্ত্রী ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি হলুদ সাংবাদিকতা থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইন করতে হবে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে প্রায়শই বলা হয়। পৃথিবীতে কিছু ভাড়াটিয়া মানবাধিকার সংগঠন রয়েছে। এইসব মানবাধিকার সংগঠন সাদ্দাম হোসেন ফাঁসির পর কোনো বিবৃতি দেয় না, বেলজিয়ামে গুলি করে মানুষ হত্যার পর কোনো বিবৃতি দেয় না। আজ দেখলাম তারা একটা বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নাকি হুমকির মুখে। এইসব ভাড়াটিয়া মানবাধিকার সংগঠন এখন বিবৃতি দিচ্ছে।
গণতন্ত্রের সূতিকাগার বৃটেনের একটি ঘটনার অবতারণা করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিবিসিতে ২০১২ সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসের দিকে একজন রাজনীতিবিদকে নিয়ে একটি ভুল সংবাদ ছাপানো হয়। ওই ভুল সংবাদ ছাপানোর দায়ে বিবিসি’র তৎকালীন ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদত্যাগ করেছিলেন। পদত্যাগের পর নভেম্বর মাসের ৯ তারিখে বিবিসি থেকে নয়, বাইরে এসে একটি স্টেটমেন্ট দিয়েছিলেন। সেদিন শুধু তিনিই পদত্যাগ করেননি ওই সংবাদ ছাপানোর পেছনে যারা যুক্ত ছিল তারা সবাই পদত্যাগ করেছিলেন।
আরও একটি পত্রিকার উদাহরণ টেনে হাছান মাহমুদ বলেন, বৃটেনের সবচাইতে পুরাতন পত্রিকা ‘নিউজ অব দি ওয়ার্ল্ড’ ১১০ বছরের পুরনো পত্রিকা একটি ভুল সংবাদ ছাপানোর জন্য ওই পত্রিকার সম্পাদক, সাংবাদিক পদত্যাগ করেছিল। এমনকি পুলিশ পর্যন্ত পদত্যাগ করেছিল। শুধু পদত্যাগই করেনি ১১০ বছর চলার পর সেই পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি ভুল সংবাদ ছাপানোর জন্য সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের সংসদে ডেকে কয়েক ঘণ্টা জেরা করা হয়।
তিনি বলেন, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বিবিসি’র সম্পাদকের মতো সাহস দেখিয়ে পদত্যাগ করেননি। এদের মতো লোকের কিছু হবে না- এমন আইন থাকতে পারে না। তাই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি হলুদ সাংবাদিকতা থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে আইন করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৬
এসকে/এসএম/এমজেএফ