ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলার পৃষ্ঠপোষকতা করছে না সরকার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৬
মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলার পৃষ্ঠপোষকতা করছে না সরকার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু

ঢাকা: সেনা সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রতিবেদন প্রকাশের জের ধরে সম্প্রতি আলোচনায় আসা ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলায় সরকার কাউকে উৎসাহ দিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
 
বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন তিনি।


 
মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলায় সরকারের কোনো সমর্থন বা এতে সরকার বিব্রত কি-না- প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার মাহফুজ আনামের স্বীকারোক্তিতে সরকারিভাবে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মামলাগুলো বিভিন্ন স্তরের সংক্ষুব্ধ নাগরিকদের। এগুলোর সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। আদালত দেখবেন মামলার যৌক্তিকতা আছে কি-না।
 
‘মামলা করতে কাউকে উৎসাহিত করছি না বা পৃষ্ঠপোষকতাও করছি না। সংক্ষুব্ধ নাগরিকদের মামলাগুলো কতোটুকু যৌক্তিক অযৌক্তিক তা আদালত দেখবেন’- বলেন ইনু।
 
প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারে বিজ্ঞাপন না দিতে কোনো মহল থেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে কি-না- এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞাপন দেওয়া না দেওয়ার বিষয়ে বেসরকারি সংস্থাকে পরামর্শ দেওয়ার কোনো এখতিয়ার সরকারের নেই এবং কোনো আইন নেই। তথ্য মন্ত্রণালয় বা সরকারের কোনো মহল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বেসরকারি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে বিজ্ঞাপন না দেওয়ার কোনো নির্দেশ দিতে পারি না এবং দেয়নি।
 
‘বাংলাদেশে এখন ছয় হাজার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আছে। কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান লিখিত অভিযোগ করে থাকলে আমরা দেখবো’।
 
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মাহফুজ আনাম সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ১/১১’র সময়কালের ঘটনার বিবরণ মাত্র। এখানে কোনো অত্যুক্তি বা বিষোদগার নেই। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমরা সেই সময়কার সেনা সমর্থিত সরকার কর্তৃক রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মচারী এমনকি গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর যে নির্যাতন-হয়রানি হয়েছিল, তারই পরিস্কার চিত্রটি দেখতে পাই। এখানে কোনো প্রতিহিংসার বিষয় নেই।
 
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মাহফুজ আনাম সম্পর্কে মায়াকান্না কাঁদছে বলেও মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
 
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রে একটি সংবাদপত্র বা একজন সম্পাদক বা সাংবাদিক রাজনীতিকদের সমালোচনা করতে পারেন। একজন রাজনীতিক কি সংবাদপত্র বা কোনো সাংবাদিক বা সম্পাদকের যৌক্তিক সমালোচনা করার অধিকারও রাখেন না? কোনো রাজনীতিক সংবাদপত্র বা সাংবাদিক বা সম্পাদকের সমালোচনা করলেই এতো শোরগোল তোলা হয় কেন?
 
‘গণমাধ্যম রাজনীতিবিদদের যুক্তিসঙ্গত সমালোচনা করলে যেমন গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হয় না, ঠিক তেমনি রাজনীতিকরাও যুক্তিসঙ্গতভাবে গণমাধ্যমের সমালোচনা করলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও সঙ্কুচিত হয় না। তবে গণমাধ্যম উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনীতিকদের চরিত্র হননে অপপ্রয়াস পেলে কিংবা রাজনীতিকরা যুক্তি ছাড়া গণমাধ্যমের সমালোচনা করলে গণতন্ত্রের ক্ষতি হয়, গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি এ থেকে উৎসাহ পায়’।

তিনি বলেন, রাজনীতিকদের যেমন ন্যূনতম নৈতিক মান বজায় রাখা উচিৎ, ঠিক তেমনই একজন সম্পাদকেরও ন্যূনতম নৈতিক মান বজায় রাখা উচিৎ। একজন রাজনীতিক যদি নৈতিকতার বিবেচনায় সমালোচিত হতে পারেন, একজন সম্পাদকও নৈতিকতার বিবেচনায় সমালোচিত হতে পারেন। কোনো সম্পাদকের পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনা গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপ নয়। গণমাধ্যমের ওপর কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করার অভিপ্রায় সরকারের নেই।
 
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা তছির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৬
এমআইএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।