পটুয়াখালী: সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পর্যটকদের সহযোগিতার জন্য রয়েছে ট্যুরিস্ট তথ্য কেন্দ্র। এখান থেকে সহজেই কুয়াকাটা ভ্রমণের নানা বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে।
ফলে পর্যটকরা জেনে-শুনে খুব সহজেই কুয়াকাটা ভ্রমণ করতে পারবেন বলে জানান ওই সব প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধাররা।
তবে জোয়ারের সময় আছড়ে পড়া নোনা পানির ঢেউয়ে সৈকত ও তীরের ভাঙন অব্যাহত থাকায় কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট তথ্য কেন্দ্রটিও রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে।
শুধু চলতি বছরেই চারবার জায়গা পরিবর্তন করতে হয়েছে এ কেন্দ্রটির। তারপরও পর্যটকদের সেবা ও ট্যুরিজম ব্যবসার কারণে কেন্দ্রটি কোনো না কোনোভাবে সচল রাখছেন পরিচালনাকারীরা।
ব্যবসায়ীক দিক থেকে প্রতিষ্ঠানটি খোলা হলেও এটি এখন পর্যটকদের তথ্য গাইড হিসেবে কাজ করছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির পরিচালনায় এ তথ্য কেন্দ্রের মাধ্যমেই কুয়াকাটা সৈকতসহ ফাতরার বন, লাল কাঁকড়ার চর, শুটকী পল্লী, সোনাকাটা, ফকিরহাট, ক্রাবল্যান্ড, সোনারচর, লালদিয়ারচর, আশারচর, কটকাসহ বিভিন্ন স্থানে নির্দিষ্ট সময় নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকায় ভ্রমণ করার তথ্য ও সহযোগিতা পাওয়া যায়।
পাশাপাশি এ তথ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে কোথাও গেলে পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বও তাদের হাতে থাকে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির নির্ধারিত ভাড়ার তালিকায় আসা-যাওয়া ও ভ্রমণের সময়সূচি নির্ধারণ করা রয়েছে। যাতে সহযোগিতা করছে সান ট্যুরিজম, কুয়াকাটা সি ট্যুরিজম ও কুয়াকাটা ট্যুরিজম নামে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
ভ্রমণ রুটে লেখা রয়েছে-কুয়াকাটা থেকে ফাতরারবন, লাল কাঁকড়ার চর শুটকী পল্লীতে ৪ ঘণ্টার ভ্রমণে জনপ্রতি ভাড়া ২২০ টাকা, কুয়াকাটা থেকে সোনাকাটা (ফকিরহাট) ৬ ঘণ্টার ভ্রমণে জনপ্রতি ভাড়া ৩৫০, কুয়াকাটা থেকে ক্রাবল্যান্ড ৮ ঘণ্টার ভ্রমণে জনপ্রতি ভাড়া ৬৫০, কুয়াকাটা থেকে সোনারচর-ক্রাবল্যান্ড ১০ ঘণ্টার ভ্রমণে জনপ্রতি ভাড়া ১০০০, কুয়াকাটা থেকে লালদিয়ার চর (সোনাকাটা) ফকিরহাট ৯ ঘণ্টার ভ্রমণে জনপ্রতি ভাড়া ৮০০, কুয়াকাটা থেকে (সোনাকাটা) ফকিরহাট, ফাতরারবন, লালকাঁকড়ার চর, শুটকী পল্লী ৮ ঘণ্টার ভ্রমণে জনপ্রতি ভাড়া ৪৫০ টাকা ও সমুদ্র ভ্রমণে ১ ঘণ্টায় জনপ্রতি ৭০ টাকা খরচ হবে।
তবে এর বাইরেও কুয়াকাটায় নিজস্ব ব্যবস্থায় ভ্রমণ করা যায়, সেক্ষেত্রে পথ ও বাহনের ওপর নির্ভর করে দরদাম করে নেওয়া প্রয়োজন হতে পারে। আর কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতি থেকে বাহন রিজার্ভ করেও নিজের মতো বেড়ানো যায়। সেক্ষেত্রেও লোকসংখ্যা ও পথ হিসেবে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়।
এ বিষয়ে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সভাপতি মো. জনি আলমগীর বলেন, পর্যটন ব্যবসার পাশাপাশি কুয়াকাটায় আসা পর্যটকদের গাইড লাইন হিসেবে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট তথ্য কেন্দ্রের আবির্ভাব। এটি কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের যে কোন সমস্যার সমাধান, ভ্রমণ স্পটের তথ্যাদি দিয়ে থাকে। পাশাপাশি এখান থেকে স্বল্প মূল্যে নির্ধারিত খরচে কুয়াকাটা ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, আপনি দিনের কোন সময়ে কোথায় যাবেন, কতো সময় ব্যয় হতে পারে সবকিছুই আগে থেকে যেনে নিতে পারছেন। পাশাপাশি বনে কিংবা সাগরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও একজন পর্যটকের সব বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন, সে বিষয়েও তারা পর্যটকদের বুঝিয়ে দেন।
ফলে পর্যটকদের নিরাপত্তা কিংবা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোন কাজ করার প্রয়োজন হয়না।
তবে পর্যটকদের যেনে রাখা ভালো কুয়াকাটার আশপাশের বনে ঘুরতে গেলে অবশ্যই বন-বিভাগের নিয়ম-নীতি মেনে চলতে হবে এবং সৈকতে ঘুরতে হলে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির পরামর্শ নিতে হবে।
নিজেদের প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে তিনি বলেন, সৈকতে ঢেউ আছড়ে পড়ে পার ভেঙে যাওয়ায় কেন্দ্রের অস্থায়ী জায়গাটি বারবার পাল্টাতে হচ্ছে।
যদি পাড় ভাঙা রক্ষা করা যায় তবে সৈকত যেমন সুন্দর থাকবে তেমনি সাগর পাড়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট তথ্য কেন্দ্রও নির্দিষ্ট স্থানে থেকে পর্যটকদের নির্বিঘ্নে সেবা দিতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৬
আরএ