ঢাকা: ‘ইয়াবা খায়, গাঁজা খায়, মদ খায়, সব ধরনের নেশা করে। নেশার টাকা না পাইলে বাসায় জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।
রোববার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্বামীর মরদেহ নিতে এসে মর্গের সামনে এমন কথা বলেই বিলাপ করছিলেন ছেলের ছুরিকাঘাতে নিহত মোহর আলীর স্ত্রী আমিনা বেগম।
অশ্রুসিক্ত নয়নে আমিনা বাংলানিউজকে জানান, তিন বছর হলো তার ছেলে আমিনুল মাদকাসক্ত। ভালো করার জন্য অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ কোনো লাভ হয়নি। একটা মুদি দোকান ছিলো, নেশার জন্য সেই দোকানটাও বিক্রি করে দিয়েছে তার ছেলে।
এ নিয়ে আমিনুলের বাবার সঙ্গে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে শনিবার বিকেলে ছুরিকাঘাত করে বলেও জানান তিনি।
আমিনা বলেন, ‘মামলা করেছি। কী লাভ, স্বামীকে তো আর ফিরে পাবো না। আমি চাই আমিনুল স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক। আপনাদের সহযোগিতা চাই। স্বামী হারায়ছি, ছেলেকে হারাতে চাই না। ’
‘আমার ছেলে এমন ছিলো না। ছোট বেলায় ও খুব শান্ত স্বভাবের ছিলো। হঠাৎ করে কীভাবে নেশাগ্রস্ত হলো আমরা বুঝতে পারিনি’ বলে মন্তব্য করেন নিহত মোহর আলীর স্ত্রী আমিনা বেগম।
এ বিষয়ে মোহরের বোন মমতাজ বেগম ও ভাই শহর আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ছেলে আমিনুল অনেক দিন ধরে নেশা করে। তার মাথা ঠিক নাই। সে মানসিক রোগী। পাগলও বলতে পারেন। আমিনুল এক সময় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি ছিলো। ’
এ বিষয়ে কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াজেদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, শনিবার রাতে আমিনুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে রোববার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আমিনুল নেশাগ্রস্ত কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল জুরাইন কবরস্থানের ৩৩৩/২ নম্বর বাসায় মাদকাসক্ত ছেলে আমিনুলের ছুরিকাঘাত করে বাবা মোহর আলীকে। পরে তাকে ঢামেকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মোহর একজন মোজা ব্যবসায়ী। ১৯৭৪ সাল থেকে পরিবার নিয়ে তিনি জুরাইনের মেডিকেল রোডের পাশে শিশু কবরস্থান এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নবাবগঞ্জ থানার মদনমোহন। মোহরের দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে নাম আমিনুল ইসলাম, ছোট ছেলে আনিসুল ইসলাম ও মেয়ে মুক্তা আক্তার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৬
আরএটি/টিআই