ঢাকা: ‘২০ মিনিটেও সিগন্যাল পার হইতে পারতাছি না, দাঁড়াইয়া মহিলা উডাইতাছোছ ক্যান, তোরে না করছি মহিলা দাঁড়াইয়া উডাইছ না, পরে ক্যাচাল করবো। মহিলা দাঁড়াইয়া যাইতে পারবো না।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) দুপুর ১টা, বনানী ট্রাফিক সিগন্যালে আটকা পড়ে বলাকা পরিবহনের বাসের চালক মফিজ মিয়া এভাবে কথাগুলো বলছিলেন তার সহযোগী (হেলপার) মো. করিমকে।
সরেজমিনে বানানী সিগন্যালে গিয়ে দেখা যায়, মহাখালী থেকে উত্তরাগামী, উত্তরা থেকে গুলিস্তানগামী বিভিন্ন ধরনের বাস বনানী সিগন্যাল পার হতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ২০ মিনিটের আগে কোনো যানবাহন সিগন্যাল পার হতে পারছে না। গাড়ির লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। অপেক্ষা বাড়ছে যাত্রীদের। রাস্তায় অতিরিক্ত গাড়ির চাপ থাকায় প্রতি সিগন্যালে তিন থেকে চারটি বেশি গাড়ি ছাড়ছে না ট্রাফিক পুলিশ। এতে যানজট তীব্র হচ্ছে।
বনানী সিগন্যালে দাঁড়িয়ে কথা হয় বলাকা পরিবহনের বাস চালক মফিজ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আগে শুক্রবারে রাস্তায় যানজট কম থাকলেও এখন শুক্রবার যানজট আরো বেশি থাকে। এমইএইচ থেকে যানজট লেগে আছে। এমইএইচ থেকে বনানী সিগন্যাল পার হতে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মতো সময় লাগছে।
নারীদের উঠতে দেন না কেন, উত্তরে মফিজ বলেন, মহিলা দাঁড়িয়ে যেতে পারে না। জ্যামে মহিলারা ঝামেলা করে। পুরুষদের সঙ্গেও ঝগড়া করে।
এ বিষয়ে গাড়ির হেলপার করিম জানান, যানজট বেশি থাকলে মহিলা দাঁড়াইয়া নিতে চাই না। ঝামেলা করে।
ওই বাসের নারী যাত্রী তমালিকা সরকার বলেন, রাস্তায় বের হলে গাড়িতে ওঠতে খুব সমস্যা হয়। ওঠাতে চায় না। কিন্তু কোনো গাড়িতে সিট খালি থাকে না। বরং নারীদের সিটগুলোতে পুরুষেরা বসে থাকে। এছাড়া যানজট তো আছেই। ৫ মিনিটের রাস্তা ২৫ মিনিটে যাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ করেন ওই নারী।
যানজটের বিষয়ে কথা হয় গুলশান এক থেকে বনানীর দিকে আসা সিএনজি চালক মো. দুলালের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গুলশান-১ থেকে গাড়ি নিয়ে বনানী সিগন্যাল পার হবো। প্রায় ২০ মিনিট ধরে অপেক্ষায় আছি। সিগনাল ছাড়ছে না।
যানজটের বিষয়ে বনানী সিগন্যালে দায়িত্বরত পুলিশ সার্জেন্ট মাহমুদুল হাসান ও রাইসুল হাকিম বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে এই রাস্তায় গাড়ির চাপ বেশি দেখছি। শুক্রবার হলেও অন্যান্য দিনের মতো যানজট আছে। তবে আমরা যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৬
আরএটি/বিএস