ঢাকা: গারো জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস খাদ্য শস্যের বীজ দানকারী দেবতা মিসি সালজং-এর নির্ভরশীল জমির ফলন। তাই, গারোরা বছরের এই সময় শস্য দেবতার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতি চেয়ে ওয়ানগালা উৎসবে মেতে ওঠে।
রাজধানীর বনানী মডেল হাই স্কুল প্রাঙ্গণে শুক্রবার (০৪ নভেম্বর) বিকেলে ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব পালন করেন ঢাকাস্থ গারোরা।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপিস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ওয়ানগালা উৎসব চত্বর ঘুরে দেখা যায়, উৎসবে ঢাকায় বসবাসরত হাজার হাজার গারো আদিবাসী স্বতঃর্ফূতভাবে অংশ নিয়েছেন। শহুরে কর্মব্যস্ততার ফাঁকে দিনভর তারা আনন্দে মেতে ওঠেন। গারো জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, তরুণ- তরুণীরা নেচে গেয়ে এ উৎসবে অংশ নেন।
উৎসব উপলক্ষে বনানী মডেল স্কুল মাঠে ঐতিহ্যবাহী নানা পদের খাবারের দোকান দেওয়া বসে। দোকানগুলো ঘুরে ঘুরে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী জুম চাষের আলু, শামুক, কাঁকড়া, কুচিয়া দিয়ে তৈরি খাবারের স্বাদ নেন গারোরা।
সকালে পূজার মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়। বিকেলে পরিবেশিত হয় জুম চাষের প্রক্রিয়া নিয়ে ঐতিহ্যবাহী জুম নাচ। এছাড়া গারোদের পুরনো বিভিন্ন প্রেম কাহিনী নিয়ে নাচ ও অভিনয় প্রদর্শিত হয়।
উৎসবে অংশ নেওয়া চেলসি চিড়ান নামে এক গারো তরুণী বাংলানিউজকে বলেন, ওয়ানগালা গারোদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ওয়ানগালা উৎসবের মাধ্যমে মিসি সিলজাং বা শস্য দেবতার কাছে বছরের প্রথম ফসল খাওয়ার অনুমতি নেই। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ, তার দয়া ছাড়া ফসল জন্মায় না। এছাড়া এর মাধ্যমে ঢাকায় বসবাসরত গারোরা এক সঙ্গে মিলিত হবার সুযোগ পাই।
পাহাড়ি জনপদে এ উৎসব এক সপ্তাহব্যাপী হয়ে থাকে বলেও জানান তিনি।
রাজধানীতে গারোরা ২০০৮ সাল থেকে ওয়ানগালা উৎসব পালন করে। বর্ষার পরে এবং শীতের আগে এ উৎসব পালন করা হয়। বাঙালির নবান্ন উৎসবের সঙ্গে এ উৎসবের মিল রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৬
এমসি/আরআইএস/এমজেএফ