ঢাকা: কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন বাংলাদেশের শিশু চিকিৎসার পথিকৃৎ ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান।
রোববার (০৬ নভেম্বর) সকালে তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিয়ে এলে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এর আগে ১১টা ৩৯ মিনিটে ডা. এম আর খানকে শ্রদ্ধা জানাতে তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয়। এরপর দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তি ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে সেখানে।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. শহীদুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘আমি স্যারের ছাত্র ছিলাম। তিনি এমন একজন শিক্ষক ছিলেন যিনি শিক্ষার্থীদের বই না থাকলে টাকা দিতেন বই কিনতে। খাওয়ার টাকা না থাকলে নিজের খাবার দিয়ে দিতেন তিনি। কিন্তু আজ তিনি নেই, তার ক্ষতি অপূরণীয়। ’
মিরপুর ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথের পরিচালক ডা. এখলাসুর রহমান বলেন, স্যার ছিলেন ‘ফাদার অব পেডিয়াট্রিশিয়ান অ্যান্ড ইনস্টিটিউশন’। কেননা স্যারই প্রথম এই বিষয়টি আবিষ্কার করেছিলেন।
‘স্যার সবার সহযোগিতা করতেন। রাত কিংবা দিন নেই যখন যার সমস্যা স্যারকে বললেই সেটা সমাধান করে দিতেন তিনি। ’
এম আর খানের মেয়ে জামাই রেজা করিম বলেন, ‘আমি অনেক সৌভাগ্যবান যে, তার জামাই হতে পেরেছি। তিনি আমাকে ছেলে ভাবতেন, জামাই নয়। বলতেন-তোমার যে কোনো সমস্যা আমাকে বলবে। কিন্তু আজ সেই মানুষটি আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন। যা ভাবতে সত্যি অনেক কষ্টের। ’
শ্রদ্ধা জানাতে আসা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘শিশু চিকিৎসার পথিকৃৎ ডা. এম আর খানকে হারিয়ে আমরা আজ শোকাহত। তিনি দেশের শিশু চিকিৎসায় যে অবদান রেখেছেন সেটা অপূরণীয়। তার স্থান কখনও পূরণ হবার নয়। ’
সাবেক সহকর্মীকে হারিয়ে শোকাহত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানও।
শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে বললেন, ‘আমি তার সহকর্মী ছিলাম। কিন্তু কখনও বুঝতেই পারিনি আমি তার সহকর্মী। খুবই অমায়িক লোক ছিলেন তিনি। কখনও রাগ করতেন না। আর যদি নিতান্তই রাগ করতেন, তাহলে তিনি মাথা নিচু করে রাখতেন। ’
‘শুধু তাই নয়, তিনি বলতেন-শিশুরা হলো একটি ফুল। তোমরা যদি ফুলকে গড়ে তুলতে না পারো তাহলে সেই ফুল ভালো ফলন দেবে না। ’
শহীদ মিনারে জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেননসহ রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতাসহ সাধারণ মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৬
এসজে/এমএ