রাজশাহী: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে কব্জি উড়ে যাওয়া যুবক খালেকের ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে জিহাদি বই, দেশীয় সস্ত্র এবং বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (৬ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত উপজেলার তাড়াশ বেলপুকুর এলাকায় ওই ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে অভিযান চালিয়ে পাঁচটি বোমা, চারটি জিহাদি বই, কম্পোজ করা দুই পৃষ্ঠা জিহাদি বার্তা, একটি হেলমেট ও বিস্ফোরণে খসে পড়া খালেকের হাতের দু’টি আঙ্গুল উদ্ধার করা হয়।
এদিন দুপুরে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, চারঘাট উপজেলার গোপালপুর গ্রামের আকবর আলী শেখের ছেলে আবদুল খালেক (২৭) বেলপুকুর এলাকার জাহিদ আলীর (৩০) বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ওই বাসায় বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে খালেক আহত হন।
সূত্র জানায়, পুলিশ ধারণা করছে খালেক জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) কিংবা ধর্মীয় উগ্রবাদী কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য। তার চাচাতো ভাই লালন হোসেনও কয়েক মাস আগে বিপুল পরিমাণ জিহাদি বই ও লিফলেটসহ আটক হয়ে এখনও কারাগারে রয়েছেন।
বাড়ির মালিক জাহিদও সন্দেহের ঊর্ধ্বে নন। পুলিশ আরও ধারণা করছে ওই বাড়িতেই সংগঠনের সদস্যদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো এবং প্রয়োজনীয় বিস্ফোরকদ্রব্য তৈরির পরে সরবরাহ করা হতো। যদিও অভিযানের সময় বাড়িতে কাউকেই পাওয়া যায়নি।
এদিকে শনিবার দিনগত রাতে একইসঙ্গে চারঘাটের গোপালপুরে আহত আবদুল খালেকের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি-পুঠিয়া সার্কেল) আসলাম আলী জানান, সেখান থেকে দু’টি বোমা, পাঁচটি হাসুয়া, দু’টি চাইনিজ কুড়াল, দু’টি জিহাদি বই, একটি ডিভাইস (অজ্ঞাত কার্যকারিতা) এবং টাইমবোমার মতো দেখতে একটি বস্তু জব্দ করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খালেকের ভাই সাদেকুল ইসলাম (৩২) ও ভাবি ইসমত আরাকে (২৫) আটক করা হয়েছে।
অস্ত্র উদ্ধারের পরে দুই থানায় পৃথক পৃথক মামলা হয়েছে, জানান তিনি।
এর আগে শনিবার (৫ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে হাতের দুই কব্জি উড়ে যায় খালেকের। এছাড়া তার ডান চোখও ঝলসে যায়। জখম হয় বুক ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ।
রাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ। বর্তমানে তিনি পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৬
এসএস/এটি