ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় নাডার প্রভাবে কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। তবে এখনও বইছে হিমেল হাওয়া।
আর হঠাৎ শীতে বিপাকে পড়েছেন রাজধানীর ফুটপাতে থাকা ছিন্নমূল মানুষ। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর গুলিস্তান, পল্টন, হাইকোর্ট এলাকা ঘুরে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় আসা এসব ভাসমান মানুষদের শীতে জুবুথুবু হয়ে ঘুমাতে দেখা যায়।
বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হয় এদের কয়েকজনের। তারা জানালেন, ভালো কোথাও থাকার জায়গা না হলে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন তারা। থাকার জায়গার সংকটের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছে শীতবস্ত্র না থাকা।
রাত তখন ২টা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এবং মাওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম মার্কেটের বারান্দা হয়ে উঠেছে শতশত হকারের বিছানা। দু’একজনের গায়ে কাঁথা থাকলেও, অধিকাংশদের ভরসা পরনের লুঙ্গি।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পাশে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন মুবিনুল ইসলাম। রাতের যে ফুটপাত তার বিছানা, সকাল হলেও সেটি হয়ে ওঠে আয়ের প্রধান উৎস- জমজমাট বাজার।
তিনি বলেন, শীত পড়ে গেছে। কিন্তু টাকার অভাবে শীতের পোশাক কেনা সম্ভব হচ্ছে না। আগে পরিবারের সদস্যদের জন্য কিনে তারপর নিজের জন্য ভাববেন, জানালেন মুবিনুল।
স্টেডিয়ামের পাশে খোলা আকাশের নিচে আবর্জনার মধ্যেও ঘুমাচ্ছেন কেউ কেউ। হাইকোর্ট এলাকার চিত্রও ছিলো একই রকম।
এরই মধ্যে জমতে শুরু করেছে শীতের পোশাকের বাজার। মধ্য রাতেও মহাখালীতে বিক্রি হচ্ছে কম্বল, বালিশ।
আইসিডিডিআরবি’র সামনে কম্বলের দাম হাঁকতে হাঁকতেই মনির হোসেন জানালেন, গত দুই-তিনদিন ধরেই বাজার ভালো। রোববার বিক্রি হয়েছে ২০-২২টি কম্বল। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) রাত পৌনে ২টা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৪০টি কম্বল।
তার কাছে রয়েছে ১৫০ ও ২০০ টাকা দামে দুই ধরনের কম্বল। সে সময় ভতিজার জন্য কম্বল কিনতে আসেন প্রিন্স তলাত মাহমুদ।
কেবল শীতের পোশাক নয়। ভাসমান এসব মানুষ এবং নানা কাজে রাতে বাইরে থাকা পেশাজীবীদের জন্য রাস্তায় রাস্তায় রয়েছে শীতকালীন খাবার। ভাপা পিঠা, চিতাই পিঠা, সেদ্ধ ডিম পশরা সাজিয়ে তখনও বসে আছেন বিক্রেতারা।
পুরান ঢাকার বিভিন্ন গলি, শাহবাগ মোড়, বাংলামোটর, ফার্মগেট এবং মহাখালীতে রাস্তার পাশে চোখে পড়ে বেশ কিছু দোকান।
বাংলাদেশ সময়: ০৬০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৬
এটি