ঢাকা, শনিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

দক্ষিণাঞ্চলে পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭
দক্ষিণাঞ্চলে পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার সচিবালয়ে বৈঠক

ঢাকা: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে পরিবহন নেতাদের সঙ্গে সরকারের তিন মন্ত্রীর প্রায় চার ঘণ্টা বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত এসেছে।

বৈঠক শেষে বেলা সোয়া ৪টার দিকে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান সাংবাদিকদের একথা জানান।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ পরিবহন নেতারা উপস্থিত ছিলেন।



অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন ও ফেরিঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধসহ ১২ দফা দাবিতে খুলনা বিভাগ, বৃহত্তর ফরিদপুর ও বরিশালসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় অনির্দিষ্টকালের পণ্য পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন ছিল মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি)।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল গাফফার বিশ্বাস ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
 
তিনি জানান, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা ১২ দফা দাবি পেশ করেছিলাম। সরকার আমাদের দাবিগুলো মেনে নিয়েছে, তারা এগুলো সামনে বাস্তবায়ন করবে। আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।
 
ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের সাইড অ্যাঙ্গেল, বাম্পার ও হুড খোলার সিদ্ধান্ত বাতিলসহ ১২ দফা দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছিল সংগঠনটি।
 
অন্যান্য দাবির মধ্যে ছিল, অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই না করতে আদেশ জারি, সড়ক ও ফেরিঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধ, পুলিশের হয়রানি দূর করা।
 
দুপুর সোয়া দুইটার দিকে অন্য একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। এরপর সভা পরিচালনার দায়িত্ব পান নৌপরিবহন মন্ত্রী। ওই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোনোভাবেই রাস্তায় অতিরিক্ত পণ্যবাহী যান চলাচল করতে দেওয়া হবে না।
 
পরে নৌমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ১২ দফা দাবি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। ট্রাকের সামনে অতিরিক্ত বাম্পার খুলে ফেলার বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন, বাম্পার খোলার সিদ্ধান্ত আগেই ছিল। বডির সঙ্গে যে অরিজিনাল বাম্পার সেটা থাকবে।
 
তিনি বলেন, হুক খোলার বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত যে চোখা হুক হবে না। বিভিন্ন দেশে যে পদ্ধতিতে হুক আছে, সেভাবে হুকের মাথা ভোতা ধরনের হবে।

অ্যাঙ্গেল খোলার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, একটা বডির জন্য অনেক টাকা লাগে, তৈরি করতে সময় লাগে। বডির জন্য অ্যাঙ্গেল করা হয়, সেজন্য বড়ির মডেলটাকে বিআরটিএ একটা স্পেসিফিকেশন করে দেবে। সেই অনুযায়ী তারা বডি তৈরি করবে। এজন্য তাদের একটু সময়ও আমরা দিয়েছি।
 
অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, গাড়ির ব্লু-বুকে উল্লেখ করা পরিমাণে মাল বহন করতে হবে। ওভারলোড বন্ধ করা হয়েছে। ওভারলোড বন্ধের জন্য যে এক্সেল লোডে অনিয়ম হয় কিনা- তা পরিদর্শনের জন্য স্বরাষ্ট্র ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। এরপর ওভারলোডের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।
 
যানজট নিরসনে হাইওয়ের পাশে ট্রাক টার্মিনাল করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে চারটি জেলায় টার্মিমাল করার কাজ শুরু হয়েছে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস সমস্যা, ট্যাক্স টোকেন দেওয়াসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

মহাসড়কে পৌর টোলের নামে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে নৌমন্ত্রী বলেন, যারা অবৈধভাবে সড়ক-মহাসড়ক থেকে টাকা নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, ঐক্য পরিষদের মহাসচিব আবদুর রহিম বক্স দুদু, বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী খানসহ পরিবহন নেতারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭/আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা
এমআইএইচ/জেডএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।