দখল এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দেখে আন্দাজ করা দুষ্কর এখানে কোনোদিন খাল ছিলো। খাল দখল করে মার্কেট করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বেড়িবাঁধ এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
হাজারীবাগ ট্যানারি এলাকা সংলগ্ন ঝাউচর এলাকায় কথা হয় মো. মিলনের সঙ্গে।
তিনি জানান, খাল দখল করতে করতে এমন পর্যায়ে গেছে, এখন খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। নতুন করে মাটি ফেলে এবং বেড়িবাঁধ থেকে কামরাঙ্গীরচর যাওয়ার জন্য কয়েক গজ পর পর কাঁচা, পাকা পুল নির্মাণ করা হয়েছে। যে যার মতো করে দখল করছে। বাধা দেওয়ার কেউ নেই।
মোহাম্মদপুর থেকে নবাবগঞ্জ, সোয়ারীঘাট এলাকায় যাওয়ার পথে, হাতের ডানপাশ ঘিরে খালপাড়ে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। মার্কেটগুলো গড়া হয়েছে পুরো খাল দখল করে।
ডিএসসিসি’র তালিকা অনুযায়ী, ধোলাইখালের অংশ (সূত্রাপুর লোহারপুল-মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিস পর্যন্ত) দখল করে এখন রাস্তা করা হয়েছে। ধোলাই খালের আরেক অংশও রাস্তায় পরিণত হয়েছে।
একইভাবে নারিন্দা (খ্রিস্টান কবরস্থানের দক্ষিণ পাশে) খাল দখল করে রাস্তা করা হয়েছে। সুতিখাল (ধলপুর মোড় থেকে মানিকনগর পর্যন্ত) খাল দখল করে রাস্তা ও স্টাফ কোয়ার্টার করা হয়েছে। কাজলা অংশে রয়েছে আংশিক রাস্তা, আংশিক খাল।
দয়াগঞ্জ মোড় থেকে ধোলাইপাড় পর্যন্ত খাল দখল করে রাস্তা করা হয়েছে। দয়াগঞ্জ মোড় সায়দাবাদ ব্রিজ পর্যন্ত খাল দখল করেও রাস্তা হয়েছে। একইভাবে দয়াগঞ্জ মোড় থেকে নারিন্দা তিন রাস্তা মোড় পর্যন্ত রাস্তা করা হয়েছে খালের জায়গায়।
বুড়িগঙ্গা নদীর শাখা (অংশ) বর্তমানে রাস্তা, খাল আজিমপুর কবর স্থানের পশ্চিম পার্শ্বে বর্তমানে রাস্তা করা হয়েছে।
খালপাড়ে মোবাইল ফোনের দোকান দিয়েছেন মো. ছমির আলী। ছোট এক ঝাঁপের দোকান তার। ২৩নং ওয়ার্ড যুবলীগের অফিসের উল্টো পাশেই তার দোকান। খাল উদ্ধারের খবর শুনে খুশি ছমির আলী।
তিনি বলেন, এখানে ক্লাবের পক্ষ থেকে দোকান করে দেওয়া হয়েছে। দোকান প্রতি লাইন বিল হিসেবে প্রতিদিন ৮০ টাকা করে দিতে হয়। কোন ক্লাব দোকান দিয়েছে প্রশ্ন করতেই দেখিয়ে দেন যুবলীগের অফিস।
নবাবগঞ্জ এলাকায় খালের ওপর কাঠের পুল করা হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর হুমায়ন কবির বাধা দিলেও কানে তোলেননি কামরাঙ্গীচরের কাউন্সিলর মো. হোসেন দাবি। কোনোকিছুর তোয়াক্কা না করেই নির্মাণ করে যাচ্ছেন পুল।
এসব খালপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার কথা দাবি করলেও জরিপ নেই ডিএসসিসি’র। অল্প কিছুদিনের মধ্যে ঢাকা জেলা প্রশাসন ও ঢাকা ওয়াসাকে নিয়ে জরিপে যাবেন তারা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা অল্প কয়েকদিনের মধ্যে একটি সার্ভে করবো, সেই সার্ভের পর সুপারিশ করা হবে কোন এলাকায় কোন কোন স্থাপনা ভাঙা হবে। যেহেতু ০৯ ফ্রেব্রুয়ারির আগে কিছুদিন সময় পাওয়া যাবে তাই কোনো সমস্যা হবে না। সার্ভে করেই উচ্ছেদ অভিযান হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭
এসএম/এসএনএস