ঢাকা, শনিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

এবার বেড়িবাঁধের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হবেই, আশা স্থানীয়দের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭
এবার বেড়িবাঁধের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হবেই, আশা স্থানীয়দের হাজারীবাগের বেড়িবাঁধে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হবে আশা করেন স্থানীয়রা। ছবি: আনোয়ার হোসেন রানা

হাজারীবাগের বেড়িবাঁধ ঘুরে: বুড়িগঙ্গা নদীর সঙ্গে মিশেছে নবাবগঞ্জ বাজারের খালটি। এই খাল দিয়ে একসময় নৌকা চলতো। মাছ ধরতো জেলেরা। আজ খাল আর নেই, যা রয়েছে তাও বেদখল। খালের যে অংশে পানি রয়েছে সেখানে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়। এখনও এই খালে সাঁতার কাটার স্বপ্ন দেখেন পঞ্চশোর্ধ্ব দেলোয়ার হোসেন।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) হাজারীবাগের নবাবগঞ্জ বাজারের স্লুইসগেট এলাকায় দাঁড়িয়ে কথা হয় দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে। বাজার ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করছেন গিয়াসউদ্দিন।

কথা হয় তার সঙ্গেও।  
 
নবাবগঞ্জ বাজারে এই মোবাইল চা বিক্রেতা বলেন, “কত মন্ত্রী-এমপি আইলো। উচ্ছেদের কথা কইলো, কিন্তু উচ্ছেদ তো হয় না, শুধু শুনি উচ্ছেদ হবে। দেহা যাক এই বার কী অয়। ”
 
দেলোয়ার হোসেন বলেন, “এই খালে সাঁতার কেটেছি, মাছ ধরেছি। স্বচ্ছ পানি ছিল, এখন হয়েছে ময়লার ভাগাড়। অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই খালে, মনটা বড় আনচান করে, খুব খারাপ লাগে বাল্যকালে স্মৃতি মনে হয়। ”
খাল হয়ে গেছে আবর্জনার ভাগাড়।  ছবি: আনোয়ার হোসেন রানাসরকারের পক্ষ থেকে খাল উদ্ধার ও খালপাড়ের অবৈধ দোকান ও অন্যান্য স্থাপনা উচ্ছেদের খবর শুনে খুশি হয়েছেন এই দেলোয়ার। অনেকটা আবেগেই বলতে থাকেন,  “শুনেছি খালের পাশে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হবে।   বুড়িগঙ্গার পাশে এই খালকে হাতিরঝিলের মতো করে সাজানো হবে। খবর শোনার পর থেকেই আমরা  প্রস্তুত রয়েছি। ”
 
স্থানীয় লোকজন জানান, নবাবগঞ্জ বাজারের স্লুইসগেট এলাকায় এই খালটি বুড়িগঙ্গার সঙ্গে মিলেছে। এক সময় এটি বুড়িগঙ্গা নদীরই অংশ ছিল। নদীর মাঝে চর পড়ার পর মানুষ পাড় ঘেঁষে বসতি স্থাপন করে। পরে তা খালে পরিণত হয়। চরটা হলো কামরাঙ্গীরচর, সেই চরেও গড়ে ওঠে বসতি।
 
দেলোয়ার হোসেন বলেন, “বাল্যকালে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই খালে সাথে। সেই স্মৃতি খুঁজে বেড়াই। দেখতে পাই চরের মধ্যে বসতি গড়ে ওঠেছে। বসতি এলাকা ঘিরেই জমেছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। এছাড়া ময়লা ফেলায় পানি দূষিত হওয়ার পর থেকেই আর মাছ পাওয়া যায় না। ”
 
স্থানীয় লোকজন জানান, তারা ছোটবেলায় দেখেছেন মানুষ গোসল করত, নৌকা চলত, মাছ ধরত। এখন আর নদীর সেই আগের চেহারা নাই। নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।
বেড়িবাঁধের অবৈধ স্থাপনা দখল হয়ে সৌন্দর্য বাড়ানো হোক, আশা করেন অস্থায়ী দোকানিরাও।  ছবি: রানাহাজারীবাগের নবাবগঞ্জ বাজারের স্লুইসগেইট এলাকায় গড়ে ওঠেছে প্রায় ১২টির মতো অস্থায়ী দোকান। এখানে রয়েছে পুরনো মোবাইল ও ভাঙড়ির দোকান। ব্যবসায়ীরা টংঘর বানিয়ে দোকান সাজিয়েছেন।
 
ব্যবসায়ী আলমগীর বলেন,  “এখানে যে দোকানগুলো দেখছেন তা সবই অস্থায়ী। এই জায়গা সরকারি। কয়েকদিনের মধ্যেই উচ্ছেদ করা হবে বলে লোকমুখে শুনেছি। ”

তিনি বলেন, “সরকারি জায়গা তাই নোটিশ পেলেই আমরা চলে যাবো। আর এখানে দুর্গন্ধ ও ময়লার কারণে বসতেও খুব সমস্যা হয়। তাই আমরাও চাই খালটি সংস্কার করা হোক। ”
 
গত ২২ জানুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাইদ খোকন রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল, বক্স-কালভার্ট ও রাস্তা অবৈধ দখলমুক্ত করার ঘোষণা দেন। প্রাথমিকভাবে আগামী ৬ এবং ৯ ফেব্রুয়ারি নন্দীপাড়া-ত্রিমোহিনী খাল এবং হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ এলাকার রাস্তা অবৈধ দখলমুক্তির জন্য অভিযান চালানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭
আরএটি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।