মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। চার মেয়ে ও দুই ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।
দায়িত্বরত চিকিৎসকের বরাত দিয়ে কুটি মনসুরের ছেলে খান মোহাম্মদ মজনু বাংলানিউজকে তার বাবার মৃত্যুর খবর জানান।
তিনি জানান, উচ্চমাত্রার ডায়াবেটিস, ফুসফুসের জটিলতাসহ নানা সমস্যায় ভুগছিলেন তার বাবা। গত বছরের ২২ ডিসেম্বর রাজধানীর রামপুরার বনশ্রীর বাসায় মাইল্ডস্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। প্রথমে তাকে কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত ১১ জানুয়ারি তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তিনি হাসপাতালের নতুন ভবনের ৬০২ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৫ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
১৯২৬ সালে ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার লোহারটেক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সত্তর ও আশির দশকে বাংলাদেশের আধুনিক বাংলা গানের পরিচিত নাম কুটি মনসুর।
তিনি ‘আমি কি তোর আপন ছিলাম নারে জরিনা’, ‘আইলাম আর গেলাম পাইলাম আর খাইলাম, ভবে কিছুই বুঝলাম না’, ‘কে বলে মানুষ মরে’, আমার তালাশ নিক বা না নিক সই আমি তারে তালাশ করি’ সহ অসংখ্য কালজয়ী গান রচনা করেছেন।
________________________________________
কুটি মনসুর তার দীর্ঘ ৬০ বছরের সংগীতজীবনে পল্লীগীতি, আধুনিক, জারি-সারি, পালাগান, পুঁথিপাঠ, ভাটিয়ালি, মুর্শিদী, মারফতি, আধ্যাত্মিক, দেহতত্ত্ব, হামদ–নাত, ইসলামী বিষয়ে প্রায় আট হাজার গান লিখেছেন বলে জানান ছেলে খান মোহাম্মদ মজনু।
মজনু আরও জানান, শেষ বয়সে তার বাবা কয়েকটি বইও লিখেছেন। যার ভেতরে রয়েছে- ‘আমার বঙ্গবন্ধু, আমার ৭১’। যেটি এবারের বইমেলায় প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
কুটি মনসুরের সেজো জামাতা সংগীত শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ দোলন জানান, তার কথা ও সুরে গান গেয়েছেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত কণ্ঠশিল্পীরা। তাদের মধ্যে আছেন সৈয়দ আব্দুল হাদী, এন্ড্রু কিশোর, রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমীন, দিলরুবা খান, নীনা হামিদ, রথীন্দ্রনাথ রায়, ফকির আলমগীর, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, ফিরোজ সাঁই, কিরণ চন্দ্র রায়, মুজিব পরদেশী, মমতাজ, ডলি সায়ন্তনী, মীনা বড়ুয়া, এম এ মতিন, জানে আলম, রবি চৌধুরী, মনির খান, শুভ্র দেব প্রমুখ।
সারাজীবন দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করা এই সংগীত ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭
এজেডএস/এএসআর