বুধবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে নিজের আত্মজীবনীমূলক দ্বিতীয় বই ‘স্মৃতিময় কর্মজীবনে’র প্রকাশনা অনুষ্ঠানে জীবন নিয়ে এমন পরিপূর্ণতার কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তার ৮৪তম জন্মদিনকে স্মরণীয় রেখে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান চন্দ্রাবতি একাডেমি বইটি প্রকাশের পাশাপাশি এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান,সাবেক সচিব এম. মোকাম্মেল হক, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, কথাশিল্পী প্রাবন্ধিক মনজুরুল ইসলামও বক্তব্য রাখেন।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চন্দ্রাবতী একাডেমির নির্বাহী পরিচালক কামরুজ্জামান কাজল।
অনুষ্ঠানে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকাশককে ধন্যবাদ। তিনি ‘সম্পূর্ণ ভুলহীন’ একটি বই প্রকাশ করেছেন। বইয়ে অনেক ভুল থাকতে পারে, সেটা একান্তই আমার, লেখকের; প্রকাশকের কোনো ভুল নেই। ’
মুহিত বলেন, ‘বাগেরহাটের কাহিনী লিখতে গিয়ে অনেক স্মৃতি ভুলে গিয়েছিলাম। এক্ষেত্রে আমার ছোট ভাই সুজন এ মুয়িজ, যিনি বাগের হাটে আমার সঙ্গে ছিলেন; তার সহযোগিতা নিয়েছি। আমার স্ত্রীও আমাকে অনেক সমৃদ্ধ করেছেন। ’
বইটিতে তৎকালীন ব্রিটেনের রানির বাংলাদেশ ভ্রমণ বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী একটি আবেদন করেন।
মুহিত বলেন, ‘আমার বই নিয়ে অনেকে মতামত দিয়েছেন। মন্তব্য করেছেন। এগুলো উপাদেয় মন্তব্য বলে আমি মনে করি। অনেকে পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো খুবই গ্রহণযোগ্য। এবং আমার জন্য সহায়ক। তবে আমি এখানে একটি সতর্কতার নোটিশ পেয়েছি, তা হলো আগামী খণ্ডগুলো লেখার ক্ষেত্রে আমাকে আরও সচেতন হতে হবে। ’
তিন ঘণ্টার এই আয়োজনকে ‘সেলিব্রেশন’ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সারাজীবন মানুষের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করেছি। আজকের এই অনুষ্ঠান তারই প্রতিফলন। ’
আবুল মাল আবদুল মুহিতের অবদানের কথা স্মরণ করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ভিশন ২০২১ প্রণয়নের নেপথ্যে ছিলেন মুহিত ভাই। নির্বাচন কমিশনের আরপিও সংশোধনীর জন্য আওয়ামী লীগের যে কমিটি হয়েছিল, সেটি ১৪টি দফা সংশোধনীর প্রস্তাব করেছিল আওয়ামী লীগ। সেই কমিটির সভাপতি ছিলেন তোফায়েল আহমেদ। আবুল মাল আবদুল মুহিত ছিলেন ওই কমিটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সেই সংশোধনীর কাজ করতে গিয়ে বহুবার আমি তাঁর বাসায় গিয়েছি। যখনই গিয়েছি, তখনই তাকে হয় লিখতে, না হয় পড়তে দেখেছি।
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর রাজনীতির ময়দানে প্রথম পরিচয়ের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আবুল মাল আবদুল মুহিত বই লিখেছেন। কিন্তু তিনি নিজেই একটি মহাকাব্য। তার সঙ্গে কথা বলা মানে একটি ইতিহাস গ্রন্থের পৃষ্ঠা উল্টানো। একটি সমাজ বিবর্তনের, রাজনীতির ইতিহাস বিবর্তনের পৃষ্ঠা উল্টানো। ’
অর্থমন্ত্রীর স্মৃতিশক্তির প্রসংশা করে সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, ‘একটা মস্তিকে কীভাবে তিনি এত তথ্য ধারণ করেন, সেটা সত্যি বুঝে ওঠা দায়। ’
বইটি লেখার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে সভাপতির বক্তৃতায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, মুহিত সাহেব যেমন বহুমাত্রিক, তার এই বইয়েও বহুমাত্রিকতার পরিচয় আছে।
শুরুতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং জন্মদিনের কেক কাটা হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরি বন্যার একক সংগীতানুষ্ঠান পরিবশেন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৫০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৬
জেপি/পিসি