ঢাকা, রবিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অভিযোগ গ্রহণে খসড়া নীতিমালা হচ্ছে দুদকে

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৭
অভিযোগ গ্রহণে খসড়া নীতিমালা হচ্ছে দুদকে

ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) কোন কোন দুর্নীতির অভিযোগ গ্রহণ করা হবে সেজন্য একটি খসড়া নীতিমালা তৈরির কাজ শুরু করেছে দুদক। শুধু তাই নয়, দুর্নীতির অভিযোগ দুদকের তফসিলভুক্ত না হলে অভিযোগদাতা কি করবে? কিংবা নতুন করে আবার কোথায় অভিযোগ করবে সেই ব্যাপারেও একটি গাইড লাইন করা হচ্ছে।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
 
মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, দুর্নীতি সূচকে আমাদের উন্নতি হয়েছে।

কিন্তু আমরা চাই দেশে দুর্নীতির মাত্রা কমিয়ে আনতে। যেন দুর্নীতি বলতে কোনো শব্দ আর বাংলাদেশে না থাকে। এজন্য কমিশনে (দুদকে) দুর্নীতির অভিযোগ করতে একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এবং কোনো অভিযোগ তফসিলভুক্ত না হলে তার জন্য কি করতে হবে সেটারও একটা নির্দেশনা থাকবে খসড়ায়। ফলে দুর্নীতি রোধে এটি বড় ভূমিকা পালন করবে।
 
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি দুদকে বিভিন্ন অভিযোগ করতে বিটিআরসি থেকে দুদক একটি ইউনিক নম্বর (হটলাইন) চালু করা করেছে। তাই দুর্নীতির যেকোনো অভিযোগ থাকলে অভিযোগকারীরা যেকোনো সময় ১০৬ ডায়াল করে অভিযোগ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কমিশন অভিযোগকারীর সব তথ্য গোপন রাখবে।
 
দুদকের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন দুদকে প্রায় শতাধিক অভিযোগ পড়ে। কিন্তু যার অধিকাংশ অভিযোগ উদ্দেশে প্রণোদিত কিংবা পূর্ব শত্রুতার জেরে করা হয়। ফলে কমিশন যখন সেই অভিযোগগুলো তদন্তে নামে তখন কমিশনকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়তে হয়। এমতাবস্থায় দুর্নীতির যেকোনো অভিযোগ গ্রহণে কমিশন যে খসড়া নীতিমালা করতে যাচ্ছে, সেটা যুগোপযোগী। এছাড়া দেশে-বিদেশে যেকোনো স্থান থেকে দুদকের হটলাইনে ফোন দিয়ে অভিযোগ করা যাবে।  
 
দুদক সূত্র আরও জানায়, হটলাইনে দেওয়া অভিযোগগুলো প্রথমে কাগজে লেখা হবে তারপর পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য কমিশনে পেশ করা হবে। অতঃপর কমিশনের নির্ধারিত বৈঠকে যাচাই বাছাই করে অভিযোগগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে, কমিশনে দায়েরকৃত অভিযোগকারী যেন কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়েন সেই বিষয়টিও মাথায় রাখবে দুদক।
 
দুদকে অভিযোগ গ্রহণে নীতিমালার ক্ষেত্রে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, অবশ্যই এই উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। কেননা একটি অভিযোগ দেওয়া হলো আর সেটা যাচাই বাছাই না করেই তদন্ত শুরু করা হলো এটা মোটেও সঠিক নয়। কেননা এতে সময় যেমন অপচয় হয় তেমনিভাবে আবার নিরাপরাধ ব্যক্তিও হয়রানির শিকার হন। তাই এই উদ্যোগটি আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল বলে তিনি মনে করেন।
 
তিনি আরও বলেন, দুদককে আরও বেশি বেশি চোখ কান খোলা রেখে কাজ করতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে যেকোনো মুহুর্তে দুদককে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মনে রাখতে হবে,দুদক দুর্নীতি প্রতিরোধে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান। যারা সর্বোত্তম ক্ষমতা ব্যবহার করার অধিকার রাখে। কাজেই কাজ করলে আগে আর পরে সফলতা আসবেই এটা নির্ধারিত।
 
গত ১১ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, নতুন বছর হবে দুর্নীতিবাজদের জন্য আতঙ্কের। অন্যায়ের সঙ্গে কোনো আপস নয়। কেননা এই বছর ফাঁদ পেতে দুর্নীতিবাজদের ধরতে কড়া অভিযান চালানো হবে। তাই সবাইকে সতর্কতার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান দুদক চেয়ারম্যান।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৭
এসজে/পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।