কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীর দক্ষিণখানে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর জঙ্গি তৎপরতার তেমন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। জঙ্গিরা এখন রাজধানীতে নেই, তারা এখন রাজধানীর বাইরে (গ্রাম পর্যায়ে) সংগঠিত হচ্ছে।
সূত্র জানায়, রাজধানীতে এখন তৎপর নেই জঙ্গিরা। তারা বেশিরভাগই এখন ঢাকার বাইরে অবস্থান করছে। মফস্বল শহর বা গ্রাম থেকে তারা দল গোছাতে ব্যস্ত। জেলা পর্যায়ে ট্রেনিং ও নিচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, সম্প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে জঙ্গিরা। জঙ্গিদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের এক’শ জনের মধ্যে প্রায় ৪০ জনই বিভিন্নভাবে নিহত হয়েছেন। আর তাই সাংগাঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে জঙ্গিরা। যখনই কোনো অভিযান হয় এবং তারা সাংগাঠনিকভাবে নিজেদের দুর্বল মনে করে তখনই সংগঠিত হওযার চেষ্ঠা করে।
তরুণ প্রজন্মের কথা উল্লেখ করে সূত্র জানায়, জঙ্গি নেতারা সব সময় মেধাবী ও অভিজাত পরিবারের সন্তাদেরকে টার্গেট করে থাকে। তাদের আইওয়াস করে। ধর্মের বিভিন্ন অপব্যাখ্যা দিয়ে জিহাদের কথা বলে।
এ বিষয়ে র্যাব মিডিয়া উইংয়ের সহকারী কমিশনার মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, জেএমবিসহ অন্য দলগুলোর কোমর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এখন তারা আর আগের মত সক্রিয় হতে পারবে না।
তিনি বলেন, গত বছরের (২০১৬) জানুয়ারি থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৪৮ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে জেএমবি সদস্য রয়েছে ৪০ জন।
জঙ্গি বিষয়ে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৩ সাল থেকে শোলাকিয়া হামলা পর্যন্ত যত জঙ্গিদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে জেএমবির সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, জেএমবির অর্থযোগান দাতা ও শীর্ষ নেতা তামিম গ্রেফতার হওয়ার পর জেএমবি এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। সংগঠনের শক্তি কমে এসেছে। আমরা মনে করছি এই দলটি নির্মূলের পথে।
তবে এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল অবসর প্রাপ্ত আব্দুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, জঙ্গিরা দলগত ও রাজনৈতিক আর্দশে বিশ্বাসী। তারা যখন চাপের মুখে পড়ে তখন তারা নিশ্চুপ হয়ে যায় এবং চুপিসারে দল গোছাতে থাকে।
তিনি আরো বলেন, যদি মৌলবাদের সম্প্রচার ও জঙ্গিদের মূল উৎপাটন করা না হয় তাহলে কখনই পুরোপুরি নির্মূল সম্ভব নয়। সম্প্রতি বিভিন্ন হামলা এবং অভিযানে নব্য জেমবির পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। এতে বোঝা যায়, নতুন কৌশল ও নেতৃত্ব নিয়ে চুপিসারে সংগঠিত হচ্ছে তারা। তবে অর্থায়ন বন্ধসহ তাদের প্রচারণা বন্ধ করতে পারলেই জঙ্গি নির্মূল করা সম্ভব হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বারাকাতের তথ্যমতে, মৌলবাদীদের নিয়ন্ত্রণাধীন বেসরকারি সংস্থার প্রাথমিক লক্ষ্য জনগণের কাছে পৌঁছানোর জন্য সংস্থার প্লাটফর্মকে ব্যবহার করা। পরবতীতে তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডার সঙ্গে অথনৈতিক স্বার্থের সম্মিলন ঘটানো।
আর এটি ঠেকাতে জনগণের কাছে এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করতে না দেওয়া হলেই জঙ্গিবাদ নির্মূল সম্ভব বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৪ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৭
আরএটি/বিএস