আদালত দুটি মামলা আমলে নিয়ে একটি মামলার বিষয়ে পুলিশকে তদন্ত ও অন্যটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি প্রমোদ চন্দ্র দাস বাদী হয়ে সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্প্রতি এ মামলা দায়ের করেন।
মাসুদ পারভেজ ছাড়াও মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- কারারক্ষী রুহুল আমিন, জাহাঙ্গীর, নজরুল, মো. নাজিম, জিয়া উদ্দিন ও মো. জামাল উদ্দিন।
গত ১৯ জানুয়ারি সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল করা মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, গত বছরের ২৯ অক্টোবর আসামি রুহুল আমিন তাকে কারাগারের ক্যান্টিনে কাজ পাইয়ে দিতে ৬৮ হাজার টাকা নেন। দুই মাস পার হওয়ার পরও তাকে কাজ দিতে নানা টালবাহানা শুরু করেন ওই কারারক্ষী। গত ১ ডিসেম্বর কারাগার পরিদর্শনকালে জেলার মাসুদ পারভেজকে কয়েদি প্রমোদ দাস টাকা ফেরত অথবা ক্যান্টিনে কাজ দেওয়ার কথা বলেন। ওই সময় জেলার উত্তেজিত হয়ে প্রমোদকে গালাগালি করেন।
এক পর্যায়ে মাসুদ কারারক্ষীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, তার টাকা চাওয়ার স্বাদ মিটিয়ে দাও। তখন করারক্ষীরা কয়েদি প্রমোদকে লাথি দিয়ে মাটিতে ফেলে তাদের হাতে থাকা লাঠি ও বন্দুকের বাট ধারা আঘাত করতে থাকে। পরে তাকে কারা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, ওইদিনের ঘটনায় উল্টো তার নামে কোতোয়ালী থানায় মামলা করেন কারাগারের ডেপুটি জেলার নূর মোহাম্মদ সোহেল। যা কোতোয়ালী থানার জিআর মামলা নং- ৩৭৫/২০১৬ নং-২।
আদালত সূত্র জানায়, গত ২৩ জানুয়ারি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) মামুনুর রহমান সিদ্দিকীর আদালতে মামলাটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পি ডাব্লিউ মূলে বাদীকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত বাদীর বক্তব্য শুনেন এবং বিষয়টি বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১’কে নির্দেশ দেন।
এদিকে জেলার মাসুদ পারভেজ মঈনকে সম্প্রতি রাঙামাটিতে বদলি করা হয়। এর পরপরই তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এক মাসের ছুটি নেন। ছুটি শেষে এখনও রাঙ্গামাটিতে যোগ না দিয়ে সিলেটে অবস্থান করছেন জেলার। ছুটিতে থাকাকালীন সময়েই নিজ এলাকা কানাইঘাটে গিয়ে হাঙ্গামা বাধান। একটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এসময় তার বিরুদ্ধে কানাইঘাট থানায় মামলা হয়।
মামলার বাদী নুরুল ইসলাম জানান, তার জমি দখল করে বাড়ি বানিয়েছেন জেলার মাসুদ পারভেজ। এ কারণে তাকে আক্রমণ করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। একই গ্রামের আরেকজন প্রবাসী খালেদুর রহমান অপরহণ চেষ্টার অভিযোগে থানায় অভিযোগ দেন জেলারের বিরুদ্ধে।
সবশেষ গত ২৬ জানুয়ারি শতাধিক গ্রামবাসী তাদের সাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপিতে জেলার মাসুদের বিরুদ্ধে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজির কাছে অভিযোগ করেন।
এতে বলা হয়, নিজ ভাতিজিকে দিয়ে ভুয়া নারী নির্যাতন ঘটনা সাজিয়ে এলাকায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মামলা দিয়েছেন জেলার মাসুদ। স্মারকলিপিতে তারা বলেন, ওইদিন এলাকায় নারী নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা স্মারকলিপিতে এ ঘটনার প্রতিকার চান। ৎ
**জেলার মাসুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ
**বদলিতে আরও বেপরোয়া সিলেটের জেলার মাসুদ!
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৭
এসএ/বিএস