তথ্যানুযায়ী, বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের প্রায় ১৪ কিলোমিটার সড়ক বরিশাল নগরীর অংশে। মহাসড়কের ওপর দিয়ে নগরীতে চলাচলকারী যানবাহনের চাপ কমানোর লক্ষ্যে আট কিলোমিটার সড়ক ফোর লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা করা হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী দুশ’কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। যার অংশ হিসেবে ২০১১-১২ অর্থ বছরে নগরীর আমতলার মোড় থেকে কাশিপুর সুরভী পেট্টোল পাম্প পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার সড়ক ফোর লেন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথম ধাপে নগরীর আমতলা মোড় থেকে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল পর্যন্ত তিন কিলোমিটার মহাসড়ক ফোর লেনে উন্নীত করা হয়। যার ডিভাইডারে রাখা হয় শোভা বর্ধনের প্রকল্প। এ জন্য ব্যয় ধরা হয় ৩০ কোটি টাকা।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল বর্ধিত দুই পাশের লেনে নগরীতে চলাচলকারী ছোট যানবাহন ও মূল লেনে দূরপাল্লার ভারী যান চলাচল করবে। ২৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে এর বিলও অনেকাংশে পরিশোধ করা হয়েছে।
অথচ পুরো চার লেন দখল করে চলছে গাড়ি পার্কিং, বাজার, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং খেলাধুলার কার্যক্রম। ডিভাইডার দখল করে চলছে স্থানীয়দের সবজি চাষাবাদ। আর ফোর লেনের বর্ধিতাংশ দখল হয়ে যাওয়ায় ছোট-বড় সব ধরনের যানবাহনই মূল মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করছে।
এতে মূল সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দুর্ঘটনাও। পাশাপাশি ডিভাইডারের কারণে সংকুচিত হওয়ায় মহাসড়কেও যান চলাচলে সৃষ্ট হচ্ছে নানাবিধ সমস্যা।
বর্ধিত সড়কের বেশ কয়েকটি খালের ওপর কালভার্ট না থাকায় এবং অবৈধ দখলের জন্য এ সড়ক কারো উপকারে আসেনি বলে জানিয়েছে গাড়ি চালকরা। তাই নির্মিত এ সড়কটি ব্যবহার উপযোগী করে তোলার দাবি জানিয়েছেন সুশীল সমাজের নাগরিকরা।
বরিশাল নগরীতে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম মাস্টার প্লান অনুযায়ী হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আহসান হাবিব কামাল।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক আরো প্রশস্ত হবে। যা বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তাই আগের মেয়াদকালে শুরু হওয়া নির্মিত ফোর লেন সিটি কর্পোরেশন থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ কারণে চার লেনের বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন এখন নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না।
নির্মিত পুরো সড়কটি ফোর লেন নয় বলে দাবি করে সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদ শাহেদ জানান, পায়রা বন্দর থেকে কন্টেইনারবাহী ভারী যানবাহন চলাচলে সড়ক প্রশস্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। তবে এ সড়কের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত তাদের জানা নেই। আর সিটি কর্পোরেশনের কোনো সড়ক হস্তান্তরের সুযোগ নেই, কিন্তু সড়ক ও জনপদ বিভাগের তা আছে।
তবে সরকারি নিয়মানুযায়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করলে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সড়কটি ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৭
এমএস/আরএ