ইংরেজি বক্তব্যের শেষভাগে গিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা যখন বাংলায় এসব কথা বলে ওঠেন, তখন মুহূর্মুহু করতালিতে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে রাজশাহী নগর ভবনের মিলনায়তন।
এমন উষ্ণ অভিবাদনের পর সবার উদ্দেশে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক আজ নতুন উচ্চতায় পৌঁছালো।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজশাহী নগর ভবন মিলনায়তনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এমনই আবেগঘন বক্তব্য রাখেন তিনি।
এর আগে নগর ভবনে ভারতীয় অনুদানে ‘রাজশাহী মহানগরীর টেকসই উন্নয়ন’ প্রকল্পের সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
এরপর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধিত করা হয়।
এ সময় শুভেচ্ছা স্মারক চিহ্ন হিসেবে স্বর্ণ দিয়ে তৈরি করা রাজশাহী ‘মহানগরীর চাবি’ উপহার দেওয়া হয় তাকে। সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিযাম উল আযীম হাইকমিশনারের হাতে এ উপহার তুলে দেন।
হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রাচীনতম এই নগরকেন্দ্রে আসতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। এই প্রথম সফর আমার স্মৃতি হয়ে থাকবে’।
স্বাক্ষরিত উন্নয়ন প্রকল্পের সমঝোতা স্মারকের কথা উল্লেখ করে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন- ‘বাংলাদেশের খুলনা ও সিলেট মহানগরীতেও একই রকম প্রকল্প নিয়ে কাজ করবে ভারত’।
‘এজন্য যা সহযোগিতা দরকার, ভারত সরকার তা করবে। আজ রাজশাহী মহানগরীর টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পের সমঝোতা স্মারকের মধ্য দিয়ে তার সূচনা হলো। পর্যায়ক্রমে খুলনা ও সিলেট মহানগরীর উন্নয়নের জন্যও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করবে ভারত। এতে দুই দেশের বন্ধন আরও সৃদৃঢ় হবে’।
তিনি বলেন, ‘রাজশাহী হচ্ছে ভারতের গেটওয়ে। এটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা। এজন্য ১৯৭৪ সালে এখানে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন স্থাপন করা হয়েছে। আমাদের সহকারী হাইকমিশনার এখানে খুবই সক্রিয়। তাই এই রাজশাহী সফর আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ’।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শ্রিংলা বলেন, ‘ভিসা সমস্যা এখন আর কোনো সমস্যা নয়। যতোদ্রুত সম্ভব সহজ পন্থায় যেদিন আবেদন, সেদিনই ভিসা দেওয়ার জন্য আমরা বলে দিয়েছি। মেডিকেল, ট্যুরিস্ট, স্টুডেন্ট, বিজনেস, শপিং ইত্যাদি ভিসার জন্য ভবিষ্যতে আর কোনো সমস্যা হবে না’।
তিনি বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছি, আগামী ০১ ফেব্রুয়ারি থেকে ট্রেন, বাস বা উড়োজাহাজের টিকিট দেখালেই ভিসা পাওয়া যাবে। এরই মধ্যে অগ্রিম অ্যাপয়েন্টমেন্ট তারিখ/ই-টোকেন ছাড়া ভিসা জমাদানের পাইলট স্কিমও সাফল্যের সঙ্গে পরীক্ষামূলকভাবে শেষ হয়েছে’।
হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘আমাদের দু’দেশের মধ্যে আন্ত:যোগাযোগ ও বন্ধুত্ব দু’টিই আগামীতে মজবুত হবে’।
দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়রের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রধান অতিথি ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ও রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মনির হোসেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দীন।
** ভারতীয় অনুদানে রাজশাহীর উন্নয়ন প্রকল্পের স্মারক সই
** বিকেলে রাজশাহী যাচ্ছেন ভারতীয় হাইকমিশনার শ্রিংলা
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৭
এসএস/এএসআর