তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রার এক পঞ্চমাংশের চেয়ে কম অর্জিত হয়েছে। এ কারণে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য অর্জনে তৎপরতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) সংসদে চলতি বছরের বাজেটের প্রথম প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৪৩ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা। যা বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার ১৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এছাড়া প্রথম প্রান্তিকে আমদানি ব্যয়ও ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১১ দশমিক ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। তবে রপ্তানি আয় বিগত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের ৭ হাজার ৭৫৯ মিলিয়ন ডলার হতে বেড়ে ৮ হাজার ৭৯ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য অর্জনে তৎপরতা আরও বাড়াতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ধারাবাহিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ ধরে অনেক সম্ভাবনাকে সামনে রেখে সূচনা হয়েছে ২০১৬-১৭ অর্থবছর। বছরের শুরু থেকেই সচল আছে অর্থনীতির চাকা, সরকারের প্রাজ্ঞ ব্যবস্থাপনায় স্থিতিশীল রয়েছে সামষ্টিক অর্থনীতির সকল খাত। আছে রাজনৈতিক সুস্থিতি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও যোগাযোগ খাতে সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সৃজিত হচ্ছে বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ।
ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, সুষম, সমৃদ্ধ ও মর্যাদাপূর্ণ বাংলাদেশ গঠনের যে স্বপ্ন আমরা রচনা করেছি তা বাস্তবায়নের এখনই অনুকূল সময়। এই সময়ের যথাযথ সদ্ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন সকলের নিঃস্বার্থ অংশগ্রহণ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পূর্বের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যকর ও গতিশীল নির্দেশনায় এ মেয়াদেও বাজেট বাস্তবায়নে আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো ২০২১-এর মধ্যে একটি জ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তি নির্ভর মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ গড়ে তোলা, দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং জনগণের জীবনমানের সার্বিক উন্নয়ন এবং কাল পরিক্রমায় ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে উন্নীত করা। এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আমাদের উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। আশার বিষয় এই যে, এ বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, আমদানি/রফতানি প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মুদ্রা বিনিময় হারসহ মৌলিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক চলকসমূহের অবস্থান বেশ সন্তোষজনক।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক সংস্কার দেশকে যে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল তার প্রভাব বিগত অর্থবছরেও দেশ সাত শতাংশের অধিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। চলতি অর্থবছরে আমাদের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা হলো ৭ দশমিক ২ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন কর রাজস্ব আদায় ১৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, একই সময়ে মোট সরকারি ব্যয় বেড়েছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। রফতানি আয় বিগত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের ৭ হাজার ৭৫৯ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৮ হাজার ৭৯ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
এডিপি বাস্তবায়নের হার বাড়ানোর লক্ষ্যে অর্থনৈতিক সর্ম্পক বিভাগ, দাতা গোষ্ঠী ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয় বিভাগ সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় ও বৃহৎ প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়মিত পরিবীক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ। ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সুত্র হতে জিডিপি’র ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ সুত্র থেকে জিডিপি’র ৩ দশমিক ১৫ শতাংশ সংস্থানের পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি জিডিপি’র ৪ দশমিক ৭ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।
** ‘টিপাইমুখ পরিবর্তন হতে পারে’
** বিচার প্রক্রিয়া গতিশীল করতে ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প
** ‘সুন্দরবন রক্ষায় ব্যবহৃত হবে গঙ্গা ব্যারেজ’
বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৭
এসকে/এসআরএস/এমজেএফ