মুক্তু মিয়া পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের ভেতরগড় মহারাজা দিঘীপাড়ের বাসিন্দা।
১৯৭১ সালে পঞ্চগড় এলাকায় দুর্গম পথে মুক্তিযোদ্ধাদের গাইড করেছেন মুক্তিযোদ্ধা মুক্তু মিয়া।
তৎকালীন পঞ্চগড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কোম্পানি কমান্ডার একেএম মাহবুব উল আলম তার মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি গ্রন্থ ‘গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে’ নামক বইয়ে এ মুক্তিযোদ্ধার নাম কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু একাত্তরের পরে ভুলক্রমে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর্যন্ত তাকে ভাগ্য বিড়ম্বনার স্বীকার হয়ে ভিক্ষার থলি নিয়ে ঘুরতে হয়েছে মানুষের দ্বারে দ্বারে। একাত্তরে গাইড করলেও জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তাকে দেখার কেউ নেই।
পঞ্চগড়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা তাকে নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ পরিবেশন করেছেন। এতে মুক্তু মিয়া প্রশাসনসহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নজরে আসেন।
অনলাইনে আবেদনের প্রেক্ষিতে শনিবার পঞ্চগড় সদর উপজেলা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি ও পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান এবং সদস্য সচিব সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু ওয়াদুদ তার সহযোদ্ধাদের স্বাক্ষর গ্রহণ করে এ ভিক্ষুক মুক্তিযোদ্ধাকে তালিকাভুক্ত করেন।
তালিকাভুক্ত হওয়ার খবর শুনে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন বঞ্চিত এ মুক্তিযোদ্ধা। সে সঙ্গে স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এতোদিন ভিক্ষা করে বেড়াইছি, মাইষ্যে আমারে ভিক্ষুক মুক্তু মিয়া কইছে, এহন মাইষ্যে আমারে মুক্তিযোদ্ধা মুক্তু মিয়া কইবো। এহন আমি মইরাও শান্তি পামু। ’
এসময় তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার কথা তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৭
আরবি/আরএ