ঢাকা, সোমবার, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ট্রেনে এক ঘুমেই খুলনা থেকে ঢাকা!

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৭
ট্রেনে এক ঘুমেই খুলনা থেকে ঢাকা! সুন্দরবন এক্সপ্রেসের আরামদায়ক এসি বার্থ কেবিন;ছবি-মানজারুল ইসলাম

খুলনা রেল স্টেশন থেকে : শিরোনাম দেখে কেউ কেউ হয়তো ভাবছেন আমি এক ঘুম দিয়ে খুলনা থেকে ঢাকা আসছি। আসলে না। খুলনা থেকে ঢাকার ট্রেনে উঠার আগে রাতের সুন্দরবন এক্সেপ্রেসের আয়েশি ভ্রমণ সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আমিরুল ইসলাম জানালেন, এক ঘুমেই এখন খুলনা থেকে ঢাকা যেতে পারছেন যাত্রীরা।

তিনি জানান, প্লেনে যাত্রীদের যেসব সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় তার থেকে এখন ট্রেনের এসি বার্থের যাত্রীদের বেশি সুবিধা দেওয়া হয়। এসি বার্থে নতুন চাদর বালিশ বালিশের কভার সব রেল সরবরাহ করে।

এ কারণে নিরাপত্তার সাথে এক ঘুমে আয়েশিভাবে ঢাকা যাওয়া যায়।

তিনি আরও জানান, চাহিদা অনুযায়ী খুলনা থেকে ঢাকাগামী চিত্রা  ও সুন্দরবন এক্সেপ্রেসের কোচগুলোয় পরিবর্তন আনা হয়েছে। কোচের ভেতর ও বাইরের নান্দনিক উৎকর্ষতা আনা হয়েছে। লাল সবুজ রঙের এ কোচগুলো ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে। সুন্দরবন এক্সপ্রেসের সুসজ্জিত চেয়ার কোচ ;ছবি-মানজারুল স্টেশন মাস্টার জানান, রেলপথে চলাচলে গতিশীলতা বেড়েছে। পাশাপাশি আধুনিকতা ও আরামদায়ক যাত্রীসেবার কারণে বেড়েছে টিকিট বিক্রি।

তিনি জানান, খুলনা থেকে সকালে চিত্রা এক্সপ্রেস এবং রাতে সুন্দরবন এক্সপ্রেস  ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় । প্রতিটি ট্রেনে ১২টি বগি থাকে এতে মোট সিট ধারণ ক্ষমতা ৮৩৪টি। যার মধ্যেই এসিবার্থ ৪৮টি, এসি চেয়ার ১৫৬টি ও শোভন ৬৩০টি। ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ৭ লাখ ২শ’ ৩৮জন যাত্রী এ স্টেশন থেকে টিকিট কেটে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমন করেছেন । খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে অপেক্ষমাণ সুন্দরবন এক্সপ্রেস; ছবি- মানজারুল ইসলামএছাড়া এই স্টেশনে টিকিট বিক্রি বাবদ  ১৬ কোটি ৪৮ লাখ ৩০ হাজার ৬ শ’ ৯৮ টাকা, পার্সেল বুকিং বাবদ ২ কোটি ১ লাখ ৩ হাজার ৩ শ’ ৬৭ টাকা, মাল গাড়িতে বুকিং বাবদ ৭৫ লাখ ১৪ হাজার ৪শ’ ৩১ টাকা এবং রেল স্টেশনের দোকান ভাড়া থেকে  ৩৫ লাখ ৯২ হাজার ৯ শ’ ৩৭ টাকা আয় হয়েছে। যা খুবই ইতিবাচক বলে দাবি করেন স্টেশন মাস্টার।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাতের আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সেপ্রেসের খ নং কোচের এসি বার্থ কেবিনের ১১-১২ নং আসনের যাত্রী এম রহমান বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় পতাকার আদলে লাল-সবুজ রংয়ের কোচগুলোতে কি নেই? ট্রেনের কোচগুলোতে রয়েছে অত্যাধুনিক আসন ব্যবস্থা, উন্নত টয়লেট, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরা, স্পেশাল কেবিনসহ নানা সুযোগ-সুবিধা। প্রতিটি বগিতে রয়েছে অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা। এত সুযোগ সুবিধা থাকায় অনেক প্লেনের যাত্রী এখন খুলনা থেকে ঢাকায় যাচ্ছেন ট্রেনে।
আসন নিচ্ছেন যাত্রীরা।  ছবি: মানজারুল ইসলামতিনি জানান, স্ত্রী সন্তান নিয়ে আরামে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার জন্য কেবিন নিয়েছি। তার মতো অনেকেই এসিবার্থ ও এসি চেয়ার নিয়েছেন আরামে যাওয়ার জন্য।

রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ওহিদ খান বাংলানিউজকে বলেন, খুলনা থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেসটি বাতাসের গতিতে ঢাকার উদ্দেশে ছুটে চলে। কোন সমস্যা না থাকলে রাত ৮টায় নির্ধারিত সময়ে ট্রেন স্টেশন ছাড়ে। আগে যেখানে ট্রেনের প্রতীক্ষায় থেকে যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হতো সেখানে এখন যথাসময়ে ট্রেন ছাড়ায় এখন ক্ষোভের পরিবর্তে আনন্দ দেখা দেয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৬
এমআরএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।