ঢাকা, সোমবার, ২৯ পৌষ ১৪৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

স্মার্টকার্ড বিতরণ: ঢাকাতেই ৫ মাস, গ্রামে কবে?

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৭
স্মার্টকার্ড বিতরণ: ঢাকাতেই ৫ মাস, গ্রামে কবে? স্মার্টকার্ড- ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বহুল কাঙ্ক্ষিত উন্নত মানের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম রাজধানীতে শুরু হয়েছে ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর, চারমাস ইতোমধ্যে অতিবাহিত হয়ে গেলো, কিন্তু ঢাকাতেই শেষ হয়নি কার্যক্রম। আরো এক মাস রাজধানীতে এ কার্যক্রম চলবে বলে জানা গেছে- তাহলে গ্রামে কতদিনে বিতরণ হবে এই প্রশ্ন খোদ নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাদেরও!

২০১৬ সালের ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এর পরদিন ঢাকার রমনা ও উত্তর‍া এবং কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে কার্ড বিতরণে যায় নির্বাচন কমিশন।

সে সময় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ৫০ লাখ ভোটারকে স্মার্টকার্ড সরবরাহের লক্ষ্যে কাজ শুরু করে সংস্থাটি। ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, আগামী ৩১ মার্চের মধ্যেই ঢাকা কার্ড বিতরণ শেষ করা হবে। সে হিসাবে আরো একমাস ঢাকাতে কার্যক্রম চললে প্রতি ১০ লাখ কার্ড বিতরণের জন্য একমাস সময় ব্যয় হয়। দেশে ভোটার রয়েছে ৯ কোটির বেশি। যদি এভাবেই কার্যক্রম চলতে থাকে তবে ৯ কোটি ভোটারের স্মার্টকার্ড বিতরণে সময় প্রয়োজন হয় ৯০ মাস। অর্থাৎ সাত বছরেরও বেশি সময় চলে যাবে কেবল বিতরণেই!

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, সঠিক প্রচারণার অভাবেই ভোটারদের কার্ড সংগ্রহে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে সময় বেশি লাগছে। এছাড়া অনেকে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে ঢাকা ছেড়ে চলে গেছেন, কেউবা আবার কর্মস্থলে থাকার কারণে যথা সময়ে বিতরণ কেন্দ্রে আসেননি। তাই ঢাকার বিতরণ কার্যক্রম চলছে ঢিমে তালে।

ইসির উপ-সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান, গ্রামে আরো বেশি সময় লাগতে পারে। কেননা, কর্মজীবী অনেক গ্রামবাসীই এখন আর গ্রামে থাকেন না। তাই বিকল্প চিন্তা করতে হবে। নয়তো কোটি কোটি ভোটারকে এই কার্ড সরবরাহ করাই যাবে না। কেননা, স্মার্টকার্ড বিতরণে চোখের আইরিশ ও দশ আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়, একজনের কার্ড অন্যকে দেওয়া হচ্ছে না।

এদিকে শুধু বিতরণের হার বাড়ালেও চলবে না, বিতরণের সময় কমিয়ে আনারও উপায় বের করতে হবে। সাত বছর ধরে বিতরণ কার্যক্রম চালানো কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। যেহেতু ভবিষ্যতে স্মার্টকার্ড দিয়েই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সেবা নিতে হবে, তাই অনেক নাগরিক ঝামেলার সম্মুখীন হবেন।

সংস্থাটির সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ঢাকায় স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রমের সিংহভাগ কাজ শেষ। শিগগির ঢাকার বাইরে বিতরণে যাবে ইসি। কম সময়ে বেশি কার্ড বিতরণের লক্ষ্য বিবেচনায় নিয়ে কাজ এগিয়ে নেওয়া হবে।

১৮ মাসের মধ্যে ৯০ মিলিয়ন স্মার্টকার্ড প্রস্তুত করে দিতে ফ্রান্সের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অবার্থার টেকনোলজিস নামে একটি কোম্পানির সঙ্গে ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি চুক্তি করে ইসি। ২০১৬ সালের জুনে মেয়াদ শেষ হলেও কারিগরি ত্রুটির কারণে চার মাস উ‍ৎপাদন বন্ধ থাকায় স্মার্টকার্ড ছাপানোর কাজ শেষ করতে বিলম্ব হয়।

ওই কোম্পানিটি ৯ কোটি ভোটারের স্মার্টকার্ড তৈরি করে দেয়। যদিও দেশে বর্তমানে ভোটার রয়েছে ১০ কোটির বেশি। তাদের ‌উন্নতমানের এ কার্ড সরবরাহে নতুন তহবিল সংগ্রহ করছে সংস্থাটি।

বিশ্বব্যাংকের সহায়তা হাতে নেওয়া স্মার্টকার্ড প্রকল্পটির (আইডিইএ) মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর।

ইসির পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকার পরে সিটি করপোরেশনগুলোতে, এরপর জেলায়, উপজেলা এবং সব শেষ ইউনিয়নগুলো স্মার্টকার্ড বিতরণ করবে সংস্থাটি।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৯ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৭

ইইউডি/এটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।