তিনি বলেছেন, ‘ঢাকা শহরের কিছু কিছু স্থানে ইতিহাস হচ্ছে। ২৫ বছর ধরে পশ্চিম শেওড়াপাড়া থেকে পীরেরবাগ ও ষাট ফুট হয়ে কল্যাণপুর পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটারের রাস্তাটি অত্যন্ত ছোট ছিল।
‘এলাকার কাউন্সিলর হুমায়ুন রশিদ জনির উদ্যোগে অনেক বছর ধরে রাস্তা প্রশস্তকরণের (৩০ ফুট) পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কিন্তু, এবারে সে ঘটনাটি ঘটলো’।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে মিরপুরের পশ্চিম শেওড়াপাড়ার অলি মিয়ার টেক এলাকায় মিরপুর-শেওড়াপাড়া-পীরেরবাগ সংযোগ সড়ক প্রশস্তকরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ও মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘পশ্চিম শেওড়াপাড়া, অলি মিয়ার টেক ও পীরেরবাগ এলাকায় রাস্তার দুই পাশে গড়ে ওঠা দুইশ’র মতো অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এখন এসব এলাকার মানুষ খুব খুশি। তারা নির্বিঘ্নে এলাকাগুলো দিয়ে চলাফেরা করতে পারছেন’।
‘রাস্তা দখল করে গড়া অবৈধ স্থাপনাগুলো শক্ত ও মজবুত ছিল। কেউ কেউ বাড়ির বাইরে এসে করেছেন, কেউ কেউ নিজের জায়গা ভেবে করেছেন। কেউ আবার খালি জায়গা পেয়েছেন, দোকান করে ফেলেছেন’।
এলাকার জনপ্রতিনিধি ও রাজউকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাদের উদ্যোগের প্রশংসা করেন মেয়র।
এরপর অন্যান্য এলাকায়ও একইভাবে কাজ করা হবে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘এরপর এক করে এক এক এলাকা ধরবো। আমাদের সমস্ত কাউন্সিলরদের বলেছি যে, এখনই সময়। অনেক পরিকল্পনা করেছি, বিভিন্ন রাস্তা নিয়ে। কাজও এখনই শুরু হবে’।
কাউন্সিলরদের প্রতি নির্দেশনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বর্তমান নির্দেশনা যে, যে কাউন্সিলর তার এলাকায় আমাদের রাস্তা পরিস্কার করে দিতে পারবেন না, উচ্ছেদ হবে না, সে এলাকায় আমরা কাজ করবো না। সুতরাং, রাস্তা অনেক হবে, আপনারা দেখবেন’।
এখানকার অনেক দোকানি নোটিশ পাননি এবং তারা সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়ে ব্যবসা করছিলেন- দোকানিদের এসব অভিযোগের ভিত্তিতে মেয়র বলেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে যে, এক এলাকার ট্রেড লাইসেন্স দেখিয়ে অন্য এলাকায় ব্যবসা করা হচ্ছে। তারা কেউ কি বলতে পারবেন যে, তারা নিজেদের এলাকায় বিল্ডিং করেছেন। এটি ড্যাবের আওতাভুক্ত এবং ড্যাব মেপে আমাদের ও রাজউকের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে এখানে এ কাজটি করা হয়েছে। সুতরাং, এখানে কনফিউশনের কিছু নেই’।
তিনি আরো বলেন, ‘সবাই সবখানে আমাদের সাহায্য করেছেন। আপনারা একটু মহাখালীতে যান। মহাখালীর ফ্লাইওভার থেকে শুরু করে কাকলী পর্যন্ত হাতের বায়ে ৭৮টি বিল্ডিং আছে। গত ১২ থেকে ৩২ বছর পর্যন্ত কোনো রং করা হয়নি। আজকে আপনার দেখেন, সেখানে কিভাবে কাজ হচ্ছে। দেখেন, ফুটপাতে কিভাবে মার্কিং করা হয়েছে। দেখেন, কি করে লোকজন ফুটপাত ছেড়ে দিচ্ছেন। সাধারণ লোকের সঙ্গে কথা বলেন। সবাই বলবেন, কি কাজ হচ্ছে’।
ডিএনসিসি’র মেয়র বলেন, আগারগাঁও-মিরপুর রোড পার হতে আগে এক ঘণ্টা সময় লাগতো। ওই এলাকার রাস্তা সংস্কারের পর এখন সময় লাগে মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিট।
এমন কোনো বাড়ির মালিককে কি পেয়েছিলেন, যিনি নিয়ম মেনে বাড়ি করেননি?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এসব খোঁজ করিনি। এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাউন্সিলর ছিলেন। এবং এ কাজে জনগণ অনেক খুশি’।
মেয়রের পাশে থাকা কাউন্সিলর জনি জানান, এ সড়কটি সম্পূর্ণ তৈরি হওয়ার পর আগাঁরগাওয়ে যানজট কমে যাবে, মিরপুর ১০ নম্বরে যানজট কমে যাবে। যে মানুষগুলো আগে ১০ নম্বর-আগারগাঁও ঘুরে আসতেন, তারা সরাসরি শেওড়াপাড়া থেকে পীরেরবাগের এই ৩০ ফুট রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারবেন। যেখানে আগে কল্যাণপুরে যেতে এক ঘণ্টা সময় লাগতো, সেখানে এ রাস্তা ব্যবহার করে যেতে সময় লাগবে মাত্র ৫ মিনিট।
ষাট ফুট হয়ে কল্যাণপুরের বাংলা কলেজ পর্যন্ত ৩০ ফুট প্রশস্ত এ রাস্তা হবে বলেও জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল, রাজউকের অঞ্চল-৩ এর পরিচালক খন্দকার অলিউর রহমান, অথরাইজড অফিসার মোবারক হোসেনসহ এলাকার স্থানীয় নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৭/আপডেট: ১৬১৪
জেডএফ/এএটি/পিসি/এএসআর