ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে স্বাগত জানিয়ে এসব স্ক্রিনে ফুটে উঠছে বিভিন্ন লেখা। একই সঙ্গে ভেসে উঠছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের ছবি।
বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যে বিউটিফিকেশন কাজ চলছে ডিজিটাল স্ক্রিন সংযোজন তারই একটি অংশ। এছাড়াও এই সড়কে বসছে ১২টি যাত্রীছাউনি। সবগুলো ছাউনিতে থাকবে ডিজিটাল স্ক্রিন। আগামী জুনমাসে এসবের কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।
কাজ শেষ হওয়ার আগে এখনই একটি যাত্রীছাউনিতে প্রথমবারের বড় আকারের তিনটি ডিজিটাল এলইডি স্ক্রিনে শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এতে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ছবি দিয়ে পাশে লেখা উঠছে ‘ওয়েলকাম টু বাংলাদেশ’। তিনদিনের সফরে ১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তিনি বাংলাদেশ আসছেন।
বনানী থেকে স্থায়ীভাবে বিউটিফিকেশন কাজ চলছে বিমানবন্দর পর্যন্ত। যেখানে ইট সুরকির সড়কের পাশে প্রকৃতির আবেশ দিয়ে গড়া ওয়াকওয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে। সন্ধ্যা হলেই জ্বলে উঠছে দৃষ্টিনন্দন আলো।
এছাড়াও ডিজিটাল প্যাসেঞ্জার শেড, ওয়াইফাই, সিসি ক্যামেরা, ফ্রি মোবাইল চার্জিং স্টেশন, ডিজিটাল ডাস্টবিন, ডিজিটাল ট্রাফিক সাইন, ভেন্ডিং মেশিন, ডিজিটাল অ্যাডভাটাইসমেন্ট বোর্ড, এটিএম বুথ, অটো রোড ডাস্ট ক্লিনার, এলইডি স্ট্রিট লাইট, এলইডি অরনামেন্টাল গার্ডেন লাইট এবং ডিজিটাল পুলিশ বক্স বসানোর কাজ চলছে।
এসব কাজে একটি বিদেশি বিশেষজ্ঞ দলও কাজ করছে। সড়কের দুই ধারে লাগানোর জন্য থাইল্যান্ড থেকে আসছে ২০ ফুট উচ্চতার দুই হাজার বনসাই গাছ।
সড়কটির মূল আকর্ষণ হবে দুই পাশের দৃশ্যাবলী। ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ভাষা ও স্বাধীনতার আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের নানা ঘটনাপ্রবাহ ফুটে উঠবে তিনটি স্মৃতিস্তম্ভে। বাংলাদেশের বীরত্বগাথার স্মৃতিসরূপ স্মৃতিস্তম্ভগুলো তৈরির কাজ এখন শেষ পর্যায়ে।
এরই মধ্যে বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত জ্বলে উঠেছে ব্যতিক্রমী এলইডি লাইটও। ঢাকায় সড়কপথে সাদা আলোর এমন ঝলক খুব বেশিদিন আগের নয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রথম এমন ধরনের এলইডি লাইট ব্যবহার শুরু করে।
সড়ক ও জনপথ অধিদফরের তত্ত্বাবধানে এই বিউটিফিকেশনের কাজ বাস্তবায়ন করছে ‘ভিনাইল ওয়ার্ল্ড’।
ভিনাইল ওয়ার্ল্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবেদ মনসুর মনে করেন, একদিন বাংলাদেশের আউটডোর বিজ্ঞাপন প্রচার বা অ্যাডভারটাইজিং সবই উন্নত বিশ্বের মতো হয়ে যাবে। সবকিছুতেই থাকবে ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া। যেটা বাংলাদেশে বনানী-বিমানবন্দর সড়ক থেকে শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে আমাদের মতো কুরুচিশীল বিজ্ঞাপন নাই। বিদেশি কেউ এলে আমরা কাঠের তৈরি ফ্রেম প্যানাফ্লেক্স ঝুলিয়ে দেই। যা অল্প কয়েক ঘণ্টা পর বিশ্রি ভাবে ছিঁড়ে যায়। কখনও হেলে যায়। এই অবস্থার একটা পরিবর্তন এনে দিলাম। এই পরিবর্তন ছড়িয়ে যাবে পুরো দেশজুড়ে।
ভিনাইল ওয়ার্ল্ডের এমডি আরও বলেন, ডিজিটাল স্ক্রিনে মানসম্মত বিজ্ঞাপন প্রদশনের পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কমকাণ্ডের বিভিন্ন সচিত্র ও ভিডিওসহ দৃশাবলী এই স্ক্রিনে দেখানো যাবে। প্রচার হবে সরকারের লাইভ প্রোগ্রাম। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি যখন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন তখন সেটা এখানে প্রচার করা হবে। তবে মূল লক্ষ্য একটি ডিজিটাল সড়ক বানানো। সেই কাজ সম্ভব হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের ডায়নামিক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের জন্য। তিনি এই সড়কের কাজের সুযোগ দিয়েছেন বলে প্রথম ডিজিটাল সড়ক হচ্ছে বনানী থেকে বিমানবন্দর।
এছাড়া সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রেকৌশলী কমকতারাও এই উন্নয়ন ও বিউটিফিকশের সব ধরণের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন-জানান আবেদ মনসুর।
তার প্রতিষ্ঠান ভিনাইল ওয়াল্ড নিজস্ব অথার্য়নে এ কাজ করছে। এতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৭
এসএ/জিপি/আরআই
** রেলস্টেশন, এয়ারপোর্ট ও সিটি বিউটিফিকেশনের প্লান আবেদ মনসুরের
** বনানী-বিমানবন্দর হচ্ছে দেশের প্রথম ডিজিটাল সড়ক
** সাংহাই-সিঙ্গাপুর ধাঁচের সড়ক বনানী-বিমানবন্দরে
** দেশের প্রথম ডিজিটাল সড়ক মার্চে