ফেনীর প্রথম মহকুমা প্রশাসক (১৮৭৬) কবি নবীন চন্দ্র সেন রাজাঝির দিঘী সম্পর্কে লিখেছিলেন, ফেনীর রাজাঝির বা রাজনন্দিনীর দীঘির জল এমন চমৎকার ছিলো যে, একজন রাজসাহী (রাজশাহী) নিবাসী ইন্সপেক্টর আমাকে বলিয়াছিলেন, তিনি ও তাহার সমস্ত পরিবার ম্যালেরিয়া রোগে কঙ্কালসার হইয়া, কেবল এই দীঘির জল খাইয়া আরোগ্য লাভ করিয়াছিলেন। চারিদিকের গ্রামের ও ট্রাঙ্ক রোডের যাত্রী শতশত লোক প্রত্যহ তাহার জল পান করিতো।
সরেজমিনে দেখা যায়, সারাদিনের ক্লান্তি শেষে জেলা শহরের হাজারো মানুষের প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নেওয়ার একমাত্র স্থান এই রাজাঝির দিঘী। প্রতি সন্ধ্যায় জমজমাট হয়ে ওঠে ফেনী শহরের মধ্যখানে অবস্থিত এ দিঘীর চারপাশ। এসময় লাল-নীল বাতি আর হালকা অন্ধকারে মিশে এক অপরুপ সৌন্দর্যের চিত্র ফুটে উঠে এ দিঘীর পাড়ে। এক শ্রেণির অসচেতন মানুষের দ্বারা নষ্ট হচ্ছে রাজাঝির দিঘীর পরিবেশ। দিঘীর চারপাশে ফেলা ময়লা আবর্জনা বৃষ্টির পানিতে পুনরায় দিঘী পানিতে পড়ে। স্থানীয় চা দোকানীরা সেই পানি নিয়ে আবার চা পরিবেশন করছেন।
এছাড়া, দিঘীর পশ্চিম ও পূর্ব পার্শ্বের দুইটি কোর্ট মসজিদের মুসল্লিরা এবং হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারীরা নিয়মিত দীঘিটিতে ওজু ও গোসল করে। শুধুমাত্র সচেতনতার অভাবে এবং প্রশাসনের খামখেয়ালিতে নষ্ট হচ্ছে রাজাঝির দিঘীর পরিবেশ।
‘দখল দূষণে সৌন্দর্য হারাচ্ছে রাজাঝির দিঘী’ এ শিরোনামে বাংলানিউজে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর ফেনী জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান ও পৌর মেয়র হাজী আলা উদ্দিন দিঘীটিসহ শহরের দর্শনীয় স্থানগুলো রক্ষা করার জন্য দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বর্তমানে সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেু শহরের সাধারণ মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৭
এনটি