বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকায় সফররত ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেলে সেখানে দুই নেতার একান্ত ও দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক হয়।
বৈঠকের পর দু’পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
আন্তঃসরকার যৌথ কমিটি গঠন নিয়ে গৃহীত এই সমঝোতা চুক্তি দুই দেশের মধ্যে পররাষ্ট্র বিষয়ক সহযোগিতার সম্পর্ক জোরদার করবে।
চুক্তি সই পর ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রাখা পরিদর্শক বইয়ে তার মন্তব্য লেখেন ও তাতে স্বাক্ষর করেন।
পরে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। তিনি জানান, ফিলিস্তিন ও ইসরাইল দুটি পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ তার প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন পুনব্যক্ত করেছেন শেখ হাসিনা। ব্রিফিংয়ে সূচনা বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
শহীদুল হক আরও জানান, ভ্রাতৃপ্রতীম দুই দেশের মধ্যে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের নতুন করে বসতি স্থাপনের উদ্যোগের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন ইস্যু সমাধানে ‘দুই জাতির জন্য দুই রাষ্ট্র’ নীতি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বাংলাদেশ সরকারের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মাহমুদ আব্বাসকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ফিলিস্তিনিদের স্বতন্ত্র জাতিসত্ত্বায় সমর্থন করে।
মাহমুদ আব্বাস এসময় ইসরাইলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান ও রাষ্ট্র হিসেবে দেশটিকে স্বীকৃতি না দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।
তিনি বলেন, দুই নেতা এসময় মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের প্রতি ফিলিস্তিনের অবিংসবাদিত প্রয়াত নেতা ইয়াসির আরাফাতের সমর্থনের কথা এবং জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করেন।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, বৈঠকের পর বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ‘আন্তঃসরকার যৌথ কমিটি’ বিষয়ক যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে তার মাধ্যমে দু’পক্ষের পররাষ্ট্র দফতরের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতার নতুন সুযোগ তৈরি হলো।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের এই সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো।
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বুধবার বিকেলে ঢাকা পৌঁছান আব্বাস। বাংলাদেশে তার এটিই প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভার স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন ও বঙ্গবন্ধু যাদুঘর পরিদর্শন করেন মাহমুদ আব্বাস। সেখান থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসেছেন।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদেরও সৌজন্য সাক্ষাৎ রয়েছে। এছাড়া রাতে আব্বাস তার সম্মানে বঙ্গভবনে আয়োজিত এক রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে অংশ নেবেন। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা ছাড়বেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৭
এইচএ/এমএমকে/
আরও পড়ুন
** দুই ভ্রাতৃপ্রতীমের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
** প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মাহমুদ আব্বাস