ঢাকা, সোমবার, ২৯ পৌষ ১৪৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

জেরুজালেম প্রশ্নে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৭
জেরুজালেম প্রশ্নে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন

ঢাকা: তিন দিনের সফরে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। এই দেশ ফিলিস্তিনের বন্ধুর চেয়েও অনেকবড় কিছু। আমরা দুটি দেশ একে অন্যের ভাই। দুই দেশ ও দুই দেশের মানুষের মধ্যে যে আত্মিক সম্পর্ক সেটি সব ধরনের লোক-দেখানো আনুষ্ঠানিকতার ঊর্ধ্বে। সব ধরনের প্রটোকলের ঊর্ধ্বে।

এ অভিমত ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনি দূতাবাসের শার্জ দ্য আফেয়ার্স ইউসুফ এস রামাদানের।
 
ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্র তাদের দূতাবাস তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তরিত করবে।

অন্যাদিকে ইসরায়েলি দখলদাররা পশ্চিম তীর দখলের পর তাদের অবৈধ বসতি স্থাপন কার্যক্রম দ্রুততর করেছে।
 
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের অল্পদিন পরই ঘোষণা করেছিলেন, ফিলিস্তিনের পক্ষে বাংলাদেশের সমর্থন একশত ভাগ। আমরাও বারবার সেটা পুনর্ব্যক্ত করেছি। শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পরের বছর মহান নেতা ইয়াসির আরাফাত বাংলাদেশ সফর করেন। এবার ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে বাংলাদেশ উ‍ৎফুল্ল চিত্তে স্বাগত জানিয়েছি। এবারও আমরা আমাদের চিরাচরিত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছি। বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, মার্কিন দূতাবাস তেলআবিব থেকে স্থানান্তর কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। এটা শুধু বাংলাদেশের কথা নয়, এটা বিশ্বের বিশাল অংশেরও কথা। যা ইউরোপও এখন বলছে।

ট্রাম্পের এ ঘোষণার ব্যাপারে সরকার উপযুক্ত কূটনৈতিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে মনে করেন ফিলিস্তিনের সাবেক এ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমি মনে করি সকল পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে বাংলাদেশ সরকার ওআইসি সম্মেলনে নিশ্চয় এ ব্যাপারে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করবে।
ফিলিস্তিন সমস্যা মেটাতে মার্কিন সরকার যে নীতির কথা এতদিন বলে আসছে তা ওআইসি এবং জাতিসংঘের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষে দূতাবাস স্থানান্তরের এই ঘোষণা বিশ্বব্যাপী নানা সংশয়ের জন্ম দিয়েছে।    
 
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, দুটি বিষয়ে আমাদের প্রতিবাদ করা উচিৎ। অতীতেও আমরা এমন প্রতিবাদ জানিয়েছি। ইসরায়েলের ক্রমাগত আগ্রাসন ও দখলদারি মনোভাবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সবসময়ই বিভিন্ন ফোরামে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে।

এখন আশা করি, সরকারের তরফে এ দুটি বিষয়ে কেবল প্রতিবাদ নয়, তীব্র নিন্দাও প্রকাশ করা হবে। আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি ‍আকর্ষণ করা হবে।
 
কারণ প্রথমত, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করা হবে বলে যে হঠকারি ঘোষণাটি দিয়েছেন, তা গোটা বিশ্ব সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের চিরাচরিত অবস্থান ও সিদ্ধান্তের পরিপন্থি। দ্বিতীয়ত, ইসরায়েল পশ্চিম তীর দখল করে ফিলিস্তিনিদের মালিকানাধীন ভূমিতে যে হারে বসতি স্থাপন করছে সেটা সম্পূর্ণ বেআইনি।

ইসরায়েলি দখলদারদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব সম্প্রদায়কে আরো বেশি শক্ত অবস্থান নিতে হবে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর ফিলিস্তিনিরা যাতে স্বাধীনভাবে চলাফেরার করতে পারে, নির্বিঘ্ন জীবনযাপন করতে পারে, যাবতীয় মানবিক অধিকার ভোগ করতে পারে, সে দাবিতে বাংলাদেশসহ সবাইকে বিভিন্ন ফোরামে সোচ্চার হতে হবে।  
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৭
কেজেড/জেএম/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।