ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ মাঘ ১৪৩১, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা বুধবার 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৭
ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা বুধবার  ফাইল ছবি

বগুড়া: মাঘের শেষ বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী মেলা ‘পোড়াদহ’। প্রায় চারশো বছরের গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ইছামতি নদীর তীরে পোড়াদহ এলাকায় এ মেলার আয়োজন করা হয়।

পরদিন বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) একইস্থানে বসবে বউমেলা।

মেলা মানেই আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠা।

নতুন জামাই-বউ ও স্বজনদের নিমন্ত্রণ জানানো। নিমন্ত্রণ দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন-পুরনো বিবেচনা করা হয় না। কারণ, মেলা বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশ। সেই ঐতিহ্য ধারণ করে সবাই মেতে ওঠেন বাধভাঙা উৎসব-উচ্ছ্বাসে।
  
মঙ্গলবার (০৭ ফেব্রুয়ারি)  উপজেলার পোড়াদহ গ্রামের মহির উদ্দিন, ইয়াসিন আলী, মুনসেফ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তির সঙ্গে আলাপচারিতায় ঐতিহ্যবাহী এ মেলা সম্পর্কে এমন তথ্য জানা যায়।  

জেলা সদর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার পূর্বে ইছামতির তীরে পোড়াদহ এলাকায় এ মেলা বসে। ফলে মেলাটি সবার কাছে ‘পোড়াদহ’ মেলা নামেই সর্বাধিক পরিচিত।
  
প্রায় চারশো বছর আগের ঘটনা। মেলাস্থলে ছিলো একটি বিশাল বটবৃক্ষ। সেখানে একদিন হঠাৎ এক সন্ন্যাসীর আবির্ভাব ঘটে। পরে সেখানে আশ্রম তৈরি করেন সন্ন্যাসীরা। একপর্যায়ে স্থানটি পূণ্যস্থানে পরিণত হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে।

প্রতিবছর মাঘের শেষ বুধবার উক্ত স্থানে সন্ন্যাসী পূজার আয়োজন করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। সমাগত হন দূর-দূরান্তের ভক্তরা। কালের আবর্তে স্থানটিতে লোকজনের উপস্থিতি বাড়তেই থাকে।

এভাবে গোড়াপত্তন ঘটে পোড়াদহ মেলার। ধর্মের গণ্ডি পেরিয়ে সব ধর্মের মানুষের মেলবন্ধনে পরিণত হয় এই মেলা। মেলাটি একদিনের। তবে উৎসবের আমেজ থাকে সপ্তাহব্যাপী। নতুন জামাই-বউ ও স্বজনরা মিলে এ উৎসব করেন।
   
রকমারি জাতের মাছ এ মেলার প্রধান আকর্ষণ। বুধবার ভোররাতের আগেই আড়তে আনা হয় বড় আকারের মাছগুলো। আর ভোররাত থেকেই আড়তে আড়তে ছুটে যান খুচরা ব্যবসায়ীরা। চাহিদা অনুযায়ী তারা মাছ কেনেন। পরে মাছের পসরা সাজিয়ে দোকানে দোকানে জেঁকে বসেন এসব ব্যবসায়ীরা। দিনভর দোকানগুলোয় চলে ধুমছে কেনাকাটা।
  
বাঘাইড়, রুই, কাতলা, মৃগেল, বোয়াল, সিলভার কার্প, বিগহেড, কালবাউস, পাঙ্গাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায় এ মেলায়। মেলায় দুই থেকে আড়াই মণ ওজনের বাঘাইড়ও পাওয়া যায়। পাওয়া যায় পনের থেকে বিশ কেজি ওজনের রুই, কাতলা, পাঙ্গাস।

বাহারি মিষ্টান্ন সামগ্রী এ মেলার আরেক আকর্ষণ। মাছ আকৃতির মিষ্টি, রসগোল্লা, সন্দেশ, জিলাপি, নিমকি, তিলের নাড়ু, খই, শুকনা মিষ্টি পাওয়া যায়। দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের মিষ্টি পোড়াদহ মেলার অন্যতম আকর্ষণ।
  
মেলায় বাহারি ডিজাইনের কসমেটিকস, খেলনা, গিফট সামগ্রী, চুড়ি, কানের দুল, মালা, কাজল, মেকআপ বক্স, ব্যাট, বল ভিডিও গেমসসহ নানা ধরনের প্রসাধনী ও খেলনা সামগ্রী পাওয়া যায়। এছাড়া এ মেলায় পাওয়া যায় কাঠের, স্টিল ও লোহার বিভিন্ন আসবাবপত্র।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৭
এমবিএইচ/এসএনএস
 


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।